সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: হাতি আটকাতে দাওয়াই কাঁঠাল৷ হাজারিবাগের বুনো দাঁতালদের জঙ্গলেই আটকে রাখার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে বনদপ্তর। তাই চলতি বর্ষার মরশুমে আমন ধানের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কাঁঠালের লোভ দেখানো হচ্ছে। যাতে কাঁঠালের ম ম গন্ধে তারা জঙ্গলেই বাধা পড়ে আর লোকালয়ে ঘেঁষতে না পারে বুনো হাতির দল। পুরুলিয়া বনবিভাগের বলরামপুর বনাঞ্চল পরিখা কেটে তার পাশে হাজার খানেক কাঁঠাল গাছ লাগানো হয়েছে।
হাতিকে এই ফল খাইয়ে লোকালয়ে প্রবেশ থেকে বিরত রাখতে অযোধ্যা বনাঞ্চলও এই কাঁঠাল চাষ করছে। সেইসঙ্গে এই বনবিভাগের ঝালদা বনাঞ্চলও দশ হেক্টর জমিতে বাঁশ গাছ লাগিয়েছে। বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলের তরফেও হাতির খাদ্যতালিকায় থাকা কাঁঠাল, কদম, অশ্বত্থ ও বাঁশগাছ লাগাতে পুরুলিয়া বনবিভাগের কাছে একটি প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। বনবিভাগের আধিকারিকরা মনে করছেন, হাতিকে জঙ্গলেই আটকে রাখতে পরিখা বা এলিফ্যান্ট প্রুফ ট্রেঞ্চের পাশাপাশি এই ফলের গাছ লাগানো দরকার৷ যাতে আমন ধান খেতে লোকালয়ে পা রাখতেই না পারে এই হস্তিকূল।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, হাতি যেসব খাবার খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে, তার মধ্যে কাঁঠাল অন্যতম। তাই বলরামপুর বনাঞ্চলে চলতি বর্ষায় ওই বিপুল সংখ্যক কাঁঠাল গাছ লাগানো হয়। এখানকার বেড়ষা বিটের বেড়ষা, ঘাটবেড়া বিটের কর্মায় কাঁঠাল গাছগুলি লাগিয়েছে বনদপ্তর। অযোধ্যা পাহাড় থেকে বেড়ষা হয়েই এই বনাঞ্চলে প্রবেশ করে হাতির দল। তাই বেড়ষার কাছে পরিখা কেটে, গাছ লাগিয়ে তাদের লোকালয়ে আসার পথ রুদ্ধ করে দেওয়া দিয়েছে।
বলরামপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক সুবিনয় পাণ্ডা বলেন, ‘কাঁঠা হাতিদের অন্যতম প্রিয় খাবার। তাই তাদের জঙ্গলের পরিসরে আটকে রাখতে ওই ফলের গাছ লাগানো হয়েছে।’ অযোধ্যা বনাঞ্চলও গবরিয়া, ভুঁইঘরা, ময়ূর পাহাড় এলাকায় পাঁচশটি কাঁঠাল গাছ লাগিয়েছে। অযোধ্যা পাহাড়ে এই গবরিয়ার জঙ্গলই হাতিদের করিডর। তাছাড়া ময়ূর পাহাড় এলাকাতেও ঘুরে বেড়ায় হাতির দল। তাই কাঁঠাল চাষের এলাকা হিসেবে এই অঞ্চলকেই বেছে নেওয়া হয়েছে বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর। অযোধ্যা বনাঞ্চলের আধিকারিক সাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা পাঁচশো কাঁঠাল গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। আরও পাঁচশো গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’
ঝালদা বনাঞ্চল খামার বিটের তরহত এলাকায় প্রায় দশ হেক্টর জমিতে বাঁশ চাষ করা হয়েছে। এবার কলমা বিটের কাঁসরায় আরও কুড়ি হেক্টর জমিতে বাঁশ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বনদপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.