সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাজেয়াপ্ত করা প্রায় তিন ড্রাম বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ঘটে গিয়েছে বিশাল দুর্ঘটনা। তীব্র বিস্ফোরণের পর আগুনের গোলা এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী মনে করিয়ে দিয়েছে হিরোশিমা-নাগাসাকির কথা। নৈহাটির সেই বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করতে যাবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সঙ্গে থাকার সম্ভাবনা বম্ব স্কোয়াডের সদস্যদেরও। পরিদর্শনে যাবেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক। বিস্ফোরণের ধরন বুঝতে তাঁরা বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করতে পারেন বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনায় জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন।
রামঘাটে, গঙ্গার তীরে যেখানে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে নৈহাটি এবং গঙ্গার অপর পাড়ের চুঁচুড়া। সেখানকার বহু বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে যায়, ফাটল ধরে দেওয়ালে। ঠিকমত পরিকল্পনা এবং অভিজ্ঞতার অভাবে নিষ্ক্রিয়করণের কাজ করতে গিয়েই এমন বিপত্তি হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেই অভিযোগকেই কার্যত মান্যতা দিয়েছিলেন পুলিশের বড়কর্তারা। তাঁরাই জানিয়েছিলেন যে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য প্রয়োজন।
আজ সেসবই খতিয়ে দেখতে যাবে ফরেন্সিক দল। বিস্ফোরণের ফলে যেসব বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাও ঘুরে দেখতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। কী ধরনের বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছিল, তার রাসায়নিক বিশ্লেষণের জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে পারেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এবং বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা। তবে বিজ্ঞানীদের একাংশের প্রাথমিক ধারণা, সাধারণ বাজি ছিল না সেগুলো। বেশ উচ্চমানের বিস্ফোরকই ছিল। সেই কারণেই বিস্ফোরণের পর এলাকায় একটি বিশাল গর্ত তৈরি হয়। ভাঙন ধরে অন্তত ৫ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বাড়িগুলিতে।
বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদই নৈহাটির রামঘাটের বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছিলেন যে পরিকল্পনার অভাবে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিজ্ঞতার অভাবও একটা কারণ। এর দায় তিনি চাপিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকদের উপরেই। তাঁর কথায়, “প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল। কত পরিমাণে ছিল তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। তিনদিন ধরে নিষ্ক্রিয় করার কাজ হয়েছে। আর একদিনই বাকি ছিল। সেটা করতে গিয়েই সমস্যা হল। দু’টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। দু’টিতে ভাঙচুর করা হয়েছে। চারজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। কারা হামলা চালাল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” রাজ্যপালও বিস্ফোরণ নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বৃহস্পতিবার। আর আজ সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি স্পষ্টই অভিযোগ করলেন, কারখানাগুলির বৈধ লাইসেন্স ছিল না। দক্ষ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যথাযথ তদন্ত করালেই এর সত্যতা উদঘাটিত হবে বলে মত তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.