ধীমান রায়: দেবীর পূর্ণাবয়ব নেই৷ নেই সন্তান-সন্ততিদের মূর্তি। নেই বাহনেরাও৷ কেতুগ্রামের গোমাইগ্রামে রায় পরিবারে দেবীদুর্গার শুধু কাটা মুণ্ড পুজো হয়৷ প্রায় ৩৫০ বছর ধরে এই বিরল মূর্তি পুজো হয়ে আসছে রায় বংশে৷ বনেদি পরিবারের এই পুজো ঘিরেই মেতে ওঠে পুরো গ্রাম৷
পরিবারের প্রবীণ সদস্য শক্তিকুমার রায় জানান, পূর্বে তাঁদের বাড়ি ছিল আউশগ্রামের দিগনগর গ্রামে৷ এক পূর্বপুরুষ কর্মসূত্রে গোমাইগ্রামে আসেন৷ এলাকার পরিবেশ তাঁর খুব পছন্দ হয়ে যায়৷ ঘর-বাড়ি করে এখানেই বসবাস শুরু করেন৷ দিগনগর গ্রামে তাঁদের কুলদেবী দুর্গার একই ধরনের মুণ্ড পুজো হয়৷ শক্তিকুমার রায়ের কথায়, “আমাদের পূর্বপুরুষ বসবাস শুরু করার পর তাঁর স্বপ্নাদেশ হয়৷ দেবীর নির্দেশে তিনি গোমাইগ্রামে একই আদলে দেবী পুজো শুরু করেন৷”
রায় পরিবারে শাক্তমতে পুজো হয়৷ সপ্তমীতে চালকুমড়ো, অষ্টমীতে ছাগবলি হয়৷ তবে এ পুজোর আরও একটি প্রথা উল্লেখ না করলেই নয়- এখানে চণ্ডীপাঠ করা হয় না৷ রায়বাড়িতে অরন্ধন দিবস পালিত হয়৷ শোভাযাত্রা সহকারে দেবীর মুখ দোলায় চাপিয়ে পুরো গ্রাম ঘোরানো হয়৷ গ্রামবাসীরাও শোভাযাত্রায় অংশ নেয়৷ শোভাযাত্রা শেষে দোলাটি নামানো হয় ঠাকুর পুকুরের পাড়ে৷ তারপর বাজনা থামিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন সবাই৷ কেন?
জানা যায়, আগে দেবীর বিসর্জনের মুহূর্তে পুকুরের উপরে পাক খেয়ে কোনও একটি গাছে এসে বসত শঙ্খচিল৷ পরিবারের সদস্য গোবিন্দ রায়ের কথায়, “মাঝে মধ্যে এখনও শঙ্খচিল দেখা যায়৷ সব বছর না দেখা গেলেও প্রথা মেনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়৷ তার পর দেবীর ভাসান হয়৷
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.