সম্যক খান, মেদিনীপুর: তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর বিশেষ সুবিধা না পেয়ে আবার বিজেপির (BJP) কোলে ঢলছেন মুকুল রায়। দু’দিন ধরে তিনি দিল্লিতে। যদিও বিজেপিতে কেউ তাঁকে নিয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আবার তৃণমূলও (TMC) দায় ঝেড়ে ফেলে বলে দিচ্ছে, উনি বিজেপিতেই আছেন। এই তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে বিশেষ মাতামাতির প্রয়োজন নেই। এই মুহূর্তে মুকুল রায় অনেকটা ‘না ঘর কা, না ঘাট কা’ পরিস্থিতিতে। তাঁর অবস্থা এতটাই করুণ যে, দীর্ঘদিন ধরে যারা মুকুল অনুগামী হিসাবে পরিচিত, তাঁরাও আর সঙ্গ দিতে চাইছেন না।
মুকুল রায় শেষ বয়সে ফের বিজেপির ছত্রছায়ায় গেলেও এবার আর তার সঙ্গী হতে চাইছেন না বিভিন্ন জেলার অনুগামীরা। তাঁরা বলছেন, ‘রায়সাহেবের মতিভ্রম হয়েছে,আমাদের নয়।’ আড়ালে বা আবডালে নয়, প্রকাশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করে তাঁরা নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিচ্ছেন। মুকুলবাবুর (Mukul Roy) কোনও কর্মকাণ্ডকে আর বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নন তাঁর একসময়ের অনুগামীরা।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মুকুল রায়ের অন্যতম অনুগামী ছিলেন শিবু পানিগ্রাহী। মুকুলবাবু বিজেপিতে থাকাকালীন জেলা বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন তিনি। তারপর মুকুলবাবু যখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন, তখন তিনিও সবার আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে আসেন। কিন্তু মুকুলবাবুকে রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু হিসেবে মানলেও এখন আর দলবদল করতে চান না শিবুবাবু। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মুকুল রায় এখন খরচের খাতায়। আমি মুকুলের অনুগামী বলে অনেক বিজেপি নেতা ফোন করছে দলে আসার জন্য। আমার উত্তর আমাকে পাগল কুকুরে কামড়ায়নি। কানা একবার লাঠি হারায়, বারবার নয়। বিজেপিতে আর সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ যাবে না।’
শুধু শিবুবাবু নন, তাঁর একান্ত অনুগামী গড়বেতার দিলীপ পাল, মিঠু প্রতিহার, চন্দ্রকোনা রোডের দেবায়ন ঘোষ, গোয়ালতোড়ের কাবেরি চট্টোপাধ্যায়, দুলাল মণ্ডল, কেশপুরের শেখ ইমদাদুল ইসলামরাও আর মুকুল অনুগামী হিসেবে থাকতে নারাজ। বরং তারা নিজেদের পরিচিতি নিয়ে রাজনীতি করতে চান। শিবুবাবু বলেছেন, মুকুলবাবু শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। কখন কি বলছেন ঠিক নেই। কোনও সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এখন আর বিজেপিতে যাবেন না। বিজেপির এখন ‘ভবঘুরে যোগদান মেলা’ করা উচিত বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.