বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: পেশা বলুন বা নেশা, তাঁর সবটা জুড়ে শুধুই গান। তাঁর প্রবল আনন্দ প্রকাশের ভাষা যেমন সুর, তেমনই দুঃখ প্রকাশের ভাষাও সুর। তিনি যে বাউল শিল্পী। গানের টানেই এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটতে থাকেন তিনি। গানের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ডাকও আসে তাঁর। তবে এবার অন্যের ডাক নয়, নিজের উদ্যোগেই গান গাইছেন তিনি। কারণ, গণতন্ত্র উৎসবের অংশীদার যে তিনি নিজেও। তাই সকলকে সচেতন করা তাঁর কর্তব্য। সেই কারণেই গান বেঁধেছেন তিনি।
বছর পঁয়তাল্লিশের বাউল শিল্পী স্বপন দত্তের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানে। ছোটবেলা থেকে গানই তাঁর ভালবাসা। সেই ভালবাসাকে আঁকড়ে থাকতেই বাউল গানের তালিম নিয়েছিলেন তিনি। ছোট ছোট গানের আসরে যোগ দিতে দিতে আজ তিনি প্রকৃত বাউল শিল্পী। যদিও বাউল গান গাওয়া তাঁর পেশা হলেও সব সময় যে পেশার স্বার্থেই তিনি গান করেন, তা কিন্তু নয়। বাউল শিল্পী স্বপন দত্ত গান করেন মনের তাগিদেই। দু’মুঠো খাদ্যের জন্য যেমন অর্থের প্রয়োজন। সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনও তাঁর কাছে তেমনই এক প্রয়োজন। সেই কারণেই এবারের ভোটে মানুষকে সচেতন করতে গান বেঁধেছেন স্বপনবাবু। আর একতারা, বাজিয়ে গ্রামে গঞ্জে ঘুরে সেই গান গেয়ে চলেছেন তিনি। তাঁর উদ্দেশ্য মানুষকে বোঝানো, কেউ যেন ভোট নষ্ট না করেন।
নির্বাচন নিয়ে যখন উত্তপ্ত রাজ্য। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসছে আক্রমণ হানাহানির খবর, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শান্তির বার্তা দিচ্ছেন স্বপনবাবু। গেরুয়া বসনের বাউলের গান শুনতে ভিড়ও জমাচ্ছেন মানুষ। স্বপন দত্ত জানিয়েছেন, ‘শিল্পী হিসাবে আমারও মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। আর সেই কারণেই ভোটের প্রচার করে করছি। তবে আমার প্রচার প্রার্থীর স্বপক্ষে নয়। আমার প্রচারের উদ্দেশ্য মানুষকে তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার বোঝানো। ইতিমধ্যেই পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, উত্তরবঙ্গ, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর ঘুরে ফেলেছেন তিনি। পাড়া গাঁয়ের শিল্পীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই। তবে তাঁর প্রচারে যদি ১ শতাংশ মানুষও ভোটকেন্দ্রমুখী হন সেটাই স্বার্থকতা, বললেন স্বপন বাউল।
ছবি: সুজিত মণ্ডল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.