শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: বেশ কয়েকদিন পর উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতেই শুরু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার সোনার বিস্কুট-সহ ভিন রাজ্যের পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করল কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর (ডিআরআই)। রাতে নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম সোনা উদ্ধার করেন ডিআরআই আধিকারিকরা। ধৃতদের শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম স্যামুয়েল মালসমটলুয়াঙ্গা, সি লালবিয়াখলুয়া, জন লালডিনথারা, ইসাখ লালরামঘাখা ও রবার্ট জোডিংলোভা। ধৃতরা প্রত্যেকেই মিজোরামের আইজলের বাসিন্দা। সরকারি আইনজীবী ত্রিদীপ সাহা বলেন, “কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ওই পাঁচ জন শিলিগুড়ি হয়ে কলকাতায় সোনা পাচারের পরিকল্পনা করেছিল। এই পাঁচ জন মূলত ক্যারিয়ার। এদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী নিলয় চক্রবর্তীর পালটা দাবি, “আমার মক্কেলদের ফাঁসানো হয়েছে। তাঁদের কাছে সোনা উদ্ধার হয়নি। মূল অভিযুক্তরা পলাতক।”
কীভাবে সোনা পাচার হয় এখানে, তার বিস্তারিতও জানতে পেরেছেন ডিআরআইয়ের গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে ওই সোনা ভারতে প্রবেশ করে। এরপর মিজোরাম থেকে সড়কপথে শিলচর পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখান থেকে শিলচর-শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ওই পাঁচ যুবক কলকাতায় পাচারের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু মাঝে ট্রেন বন্ধ থাকায় চোরাই সামগ্রী নিজেদের কাছেই লুকিয়ে রেখেছিল তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ঢুকতেই স্লিপার ক্লাসের কামরায় অভিযান চালায় ডিআরআই। ধৃত পাঁচ যুবককে হেফাজতে নিয়ে তল্লাশি চালালে প্রত্যেকের কোমরে থাকা বিশেষভাবে তৈরি বেল্টের চেম্বার থেকে সোনার ৫০টি বিস্কুট উদ্ধার হয়। প্রত্যেকটি বিস্কুটের ওজন ১৬৬ গ্রাম। লালবিয়াখলুয়া ও জোডিংলোভার বেল্ট থেকে ন’টি, লালডিনথারা ও ইসাখের থেকে ১২ টি এবং স্যামুয়েলের থেকে ৮ টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়। সোনার বিস্কুটগুলি মূলত সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বলে প্রাথমিক অনুমান ডিআরআই আধিকারিকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.