শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ছিল বাঘ, হয়ে গেল বেড়াল! ঠিক যেন সুকুমার রায়ের ‘হ য ব র ল’। বাঘরোলকে বাঘ ভেবে তুমুল আতঙ্ক ছড়াল ডুয়ার্সের ধূপগুড়িতে। শনিবার সকালে গাছের মগডালে কালো-হলুদ ডোরাকাটা প্রাণীকে শুয়ে থাকতে দেখে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগার হয়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের। পরে অবশ্য ভুল ভাঙে। বনদপ্তর এসে জালে জড়িয়ে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণটিকে।
শনিবার সাতসকালে ধূপগুড়ির দুই নম্বর ওয়ার্ডের রায় পাড়ার কাঁঠাল গাছে চিতাবাঘের মতো একটি প্রাণীকে শুয়ে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা। এর আগে গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের বসাক বাড়ির জামগাছে উঠে বসে ছিল চিতাবাঘ। মগডালে আয়েশ করে শুয়ে থাকা চিতাবাঘকে ধরে নিচে নামাতে হিমশিম খেতে হয় বনকর্মীদের। শেষপর্যন্ত ঘুমপাড়ানি গুলি করার পর অচৈতন্য করে গাছ থেকে নামানো হয় পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘটিকে।
শুরু হয় ‘অপারেশন লেপার্ড’। যে গাছের ডালে উঠে বসেছিল প্রাণীটি সেই গাছ জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন বনকর্মীরা। বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার শুভাশিস রায় জানান, “বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। বনকর্মীরা গাছে ওঠার চেষ্টা করতেই পালাবার চেষ্টা করলে জালে জড়িয়ে যায় প্রাণীটি। তখনই স্পষ্ট হয় চিতাবাঘ নয়, গাছের ডালে পাতার আড়ালে বসে থাকা প্রাণীটি চিতা বিড়াল বা বাঘরোল।”
এর আগে গত ২০ নভেম্বর ধূপগুড়ির সাত নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম পল্লী এলাকায় সিসিটিভিতে ধরা পড়া বাঘরোলের ছবিকে কেন্দ্র করে চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। রেঞ্জ অফিসার শুভাশিস রায় জানান, “বাঘরোল প্রাণীটি অনেকটা চিতাবাঘের মতোই দেখতে। তাই চিতাবাঘ ভেবে ভুল করেন অনেকে। মাছ-মুরগী-ছোট প্রাণী এদের পছন্দের খাবার। ডুয়ার্সের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় বেশ ভাল সংখ্যায় রয়েছে প্রাণীটি।” এদিন উদ্ধার হওয়া বাঘরোলটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ করে সোনাখালির জঙ্গলে ছেড়ে দেন বনকর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.