সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: সকালে বলা প্রতিটি কথার জবাব মেপে মেপে দেওয়া হল শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে। মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম (Nandigram) দিবসে তেখালির ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী ঠিক যা যা বলেছিলেন আকারে-ইঙ্গিতে, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য দিয়েই বিকেলে হাজরাকাটার সভা থেকে তাঁকে পালটা দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বললেন, ”ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা বলব আর গান্ধীজির কথা বলব না, তা যেমন হয় না, তেমনই নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর আন্দোলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অসম্ভব, তা ভুলে গেলে চলবে না।” আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে ফিরহাদ হাকিম বললেন, ”মমতার সঙ্গ ছাড়া মানে বিজেপির হাত শক্ত করা।” কারও নাম না করলেও, তাঁর বক্তব্যের নিশানায় যে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary), তা কার্যত বুঝতে বাকি রইল না কারওরই।
উপলক্ষ একটাই – নন্দীগ্রামে ‘অপারেশন সূর্যোদয়’-এর বর্ষপূর্তি। বরাবর এই দিনটায় ভূমি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে শহিদ স্মরণসভায় হাজির হন আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি শুভেন্দু অধিকারী। এবছর ছবিটা একটু ভিন্ন। একদিকে শুভেন্দু অরাজনৈতিক মঞ্চ করে শহিদ স্মরণ করেছেন তেখালিতে। বিকেলে তৃণমূল তথা রাজ্যের শাসকদলের তরফে হাজরারকাটায় আরেকটি সভা, তারও পালটায় আবার চৌরঙ্গিতে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর সভা। ত্রি-সভায় আজ দিনভর সরগরম নন্দীগ্রাম। এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলেও আলোচনার শীর্ষে সেই রাজনীতিই।
বিকেলে শহিদ রেজাউল করিমের নামাঙ্কিত মঞ্চে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, দলের শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এই সভা থেকে যে শুভেন্দুকে বার্তা দেওয়া হবে, তেমনটা আঁচ করাই হচ্ছিল। বাস্তবে দেখা গেল, আন্দাজ একেবারেই সঠিক। সকালে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ধরে ধরেই প্রায় জবাবি বক্তব্য রাখলেন ফিরহাদ হাকিম। সকালে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ছিল, ”নন্দীগ্রাম আন্দোলন কারও একার নয়, স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন।” একথা মেনে নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া যে তা সম্ভব হত না, বিকেলের সভায় বারবার তা বুঝিয়ে দিলেন ফিরহাদ। বললেন, ”সকলকে বলছি, এমন কিছু করবেন না যাতে বিজেপির হাত শক্ত হয়। এই মুহূর্তে সিপিএমের থেকেও বিপজ্জনক বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গ ছাড়ার অর্থ বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়া।”
এদিকে, এক নন্দীগ্রামে রাজ্যের শাসকদলের এতগুলো সভা ঘিরে কটাক্ষ শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, যাঁরা তৃণমূল দলটা তৈরি করেছিলেন, তাঁরা দলে আজ নেই। রাজ্যজুড়ে দলটা ভেঙে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। বিজেপি আবার শুভেন্দুর সভাকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের কথায়, ”নন্দীগ্রামে আন্দোলন, লড়াই, নন্দীগ্রামকে ধরে রাখা – সবই ব্যক্তিগতভাবে শুভেন্দুই করেছে। শুভেন্দুর সভা ভাল হয়েছে টিভিতে দেখেছি। ও বিজেপিতে যোগ দেবে কিনা জানি না। তবে ও ওর রাজনীতিটা করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.