অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: রাজ্যপালকে ‘দাদু’ বলে কটাক্ষ করলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। হাওড়া পুরসভায় ভোট না হওয়ার জন্য জগদীপ ধনকড়কেই (Jagdeep Dhankhar) দায়ী করলেন তিনি। মন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করলেন হাওড়ার এক বিজেপি নেতা। এদিকে এদিন ফের রাজ্যকে তুলোধোনা করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে ভোটে বর্বরোচিত হিংসা হচ্ছে। সর্বত্র সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। বারবার বলেও আমি ক্লান্ত।”
রবিবার উত্তর হাওড়ায় তৃণমূলের একটি কর্মী সম্মেলনে গিয়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ। সেখানে রাজ্যপালকে ‘দাদু’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “ওই ‘দাদু’র জন্যই হাওড়া পুরসভার ভোট আটকে রয়েছে। না হলে কলকাতা পুরসভার সঙ্গেই হাওড়া পুরসভার ভোট হয়ে যেত। রাজ্যপাল হাওড়া ও বালি পুরসভাকে আলাদা করা নিয়ে রাজ্য সরকারের ফাইলটি আটকে রেখেছেন বলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।” তবে খুব শীঘ্রই এর সমাধান হবে বলে আশাবাদী ফিরহাদ।
এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘রাজ্যপাল ফাইলটিতে যাতে সই করেন সেজন্য আমি তাঁর কাছে আগে ২ থেকে ৩ বার গিয়েছি। এখন আবার আমাকে ডেকেছেন উনি। এবার আমি নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করে ওঁনার কাছে যাব। এবার গেলে হয়তো উনি ফাইলটি সই করে ছেড়ে দেবেন। কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’ পাশাপাশি এদিন ফিরহাদ হাকিম উত্তর হাওড়ায় কর্মীদের উদ্দেশে জানান, হাওড়া পুরসভায় যা কাজ হয়েছে তাতে এখানে এমনিই তৃণমূল জিতে যাবে। কিন্তু তৃণমূলের মূল লক্ষ্য যে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এদিন বুথ ভিত্তিক সম্মেলনে কর্মীদের কাছে তা স্পষ্ট করে দেন ফিরহাদ। বিজেপির নাম না করে তাদের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, “২০২৪-এও খেলা হবে। এই যে ১৮টা সিট ওরা পেয়েছে, এবার ১ টা সিটও ওরা আর বাংলা থেকে পাবে না। তৃণমূল এগিয়ে যাবে। এখানে মানুষ কী চাইছে তার একটা রিপোর্ট তৈরি করে নেত্রীকে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী ২০২৪-এ ভোটের ময়দানে লড়াই করবে তৃণমূল।” ফিরহাদের কথায়, ‘‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস বলেছিলেন দিল্লি চলো। বাংলা থেকে আমরা দিল্লি যেতে পারিনি। আমরা এবার সুযোগ পেয়েছি। এবার আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব দিল্লি চলো।’’
এদিকে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা উত্তর হাওড়ার নেতা উমেশ রাই পালটা বলেন, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে রাজ্যপাল তাঁর দাদু হতেই পারেন। কিন্তু রাজ্যপাল একটি সাংবিধানিক পদে রয়েছেন এটা ওঁনার মাথায় রাখা উচিত। এদিন উমেশ আরও বলেন, ‘‘হাওড়ায় সাড়ে ৩ বছর যে ভোট হয়নি তার জন্য দায়ী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বালিকে হাওড়া থেকে আলাদা করে একটা সাংবিধানিক সংকট তৈরি করেছেন মন্ত্রী নিজে। সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন হাওড়ার বাসিন্দারা। এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী মন্ত্রী।’’ এদিন সালকিয়ার শ্রীরাম ভাটিকা হলে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় -সহ জেলা তৃণমূলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.