বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: নদিয়ার গাংনাপুর থানার অদূরে বাজি কারখানায় আচমকাই আগুন লেগে মৃত্যু হল দু’জনের৷ পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মিঠু মণ্ডল (৫৫) ও রঞ্জিত বিশ্বাস (৫৩)৷ বাড়ি গাংনাপুরে৷ মৃত দু’জনের মধ্যে মিঠু মণ্ডল বাজি কারখানার মালিক বলে জানা গিয়েছে৷ রবিবার বেলা তিনটে নাগাদ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে৷ বিকট শব্দে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখেন, আগুন জ্বলছে কারখানায়৷ আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের চারটি ইঞ্জিন৷ রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি৷
সূত্রে খবর, এদিনের এই বিস্ফোরণে ঘটনায় আহত কমপক্ষে তিনজন৷ জখম তিনজনই বাজি কারখানার শ্রমিক৷ ওই কারখানার অনেকগুলি ঘরে বাজি তৈরি হচ্ছিল৷ স্থানীয় অনেকেই ওই বাজি কারখানায় কাজ করতেন৷ ওই কারখানার পাশে বেশ কয়েকটি বাজি কারখানা রয়েছে৷ সব কারখানার বৈধ আইনি সার্টিফিকেট আছে কী না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বেলা তিনটে নাগাদ বিস্ফোরণের শব্দ শুনে তারা ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যান৷ লোকজন সহজেই বুঝে যান কোনভাবে বাজি কারখানায় আগুন লেগে৷ সোমবার বিশ্বকর্মা পুজো৷ এরপর মহালয়া ও দুর্গাপুজো৷ ফলে, বাজি তৈরির ব্যস্ততা ছিলই৷ জোর কদমে চলছিল কাজ৷ অভিযোগ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে চলছিল বাজি কারখানা৷ প্রতিবেশীদের ধারণা, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে এই ভয়াবহ আগুন লেগেছে৷ ওই কারখানায় মজুত রাখা বাজির মশলা থেকেই আগুন ভয়াবহ আকার নেয়৷
[স্টেশনের কুয়োর জল যেত ঠাকুরবাড়িতে, মহেশমুণ্ডাকে হেরিটেজ ঘোষণা রেলের]
কিন্তু, থানার অদূরে কীভাবে গড়ে উঠল এই বাজি কারখানা? পুলিশি নজরদারি না থাকার জেরেই কি এই ঘটনা? নাকি, এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য৷ বেআইনি বাজি কারখানা রুখতে যখন পরিবেশ আদালতের কড়া নির্দেশ রয়েছে, তখন কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় বাজি তৈরির বিস্ফোরক মজুত করা হল? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ উৎসবের মুখে এলাকায় বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন৷ চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ রানাঘাটের মহকুমা শাসক প্রসেনজিত চক্রবর্তী গাংনাপূরের বাজি কারখানায় আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। মহকুমা শাসক জানিয়েছেন ,’ওই ঘটনায় দুজন মারা গিয়েছেন। তিনজন নয়, এখনও অবধি দুজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই কারখানায় এখনও কেউ রয়েছেন কী না,তা দেখা হচ্ছে। দমকলকর্মীরা কাজ করছেন। যে কারখানায় এই ঘটনা ঘটেছে, তার বৈধ আইনি কাগজপত্র রয়েছে কিনা, তার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সম্পূর্ণ তদন্ত হবে।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, থানার পাশেই বহু বছর ধরে চলে আসছে একাধিক এই রকম বাজি কারখানা রয়েছে। ওই সব কারখানায় বৈধ অনুমতিপত্র রয়েছে কিনা, সে বিষয়েও মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, ‘সব কারখানারই বৈধ কাগজপত্র রয়েছে কিনা, তারা নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরি করছিল কিনা, তাও তদন্ত করে দেখা হবে। এখনও পর্যন্ত আহত দুজনকে চাকদহ হাসপাতালে পাঠানো হযেছে। একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হযেছে। একজন ভর্তি রয়েছেন।’ সেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.