কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: রাতের অন্ধকারে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার প্রচুর পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র৷ টালা ব্রিজ, বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর এবার সেই তালিকায় নাম জুড়ল মুর্শিদাবাদের৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, বিহারের সাহেবগঞ্জ থেকেই অস্ত্রশস্ত্র এ রাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছে বলেই জেরায় স্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা৷
ভোটের আগে এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে খবর পায় মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ৷ সেই অনুযায়ী রবিবার রাতে সুতি থানার সাদিকপুর ঘোষপাড়ায় হানা দেয় আধিকারিকরা৷ ওই এলাকার একটি বাড়ির মাটি খুঁড়তে শুরু করেন তদন্তকারীরা৷ রাতের অন্ধকারে কেন পুলিশ আচমকা খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছেন, তা দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই ২২ রাউন্ড গুলি, ৪ টি ওয়ান শাটার, ৩ টি পিস্তল, ২ টি মাস্কেট উদ্ধার করে পুলিশ৷ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ ধৃতদের নাম বীরচাঁদ দাস, যিশু দাস এবং মুকেশ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মধ্যে বীরচাঁদ দাসের নামে একটি খুনের মামলা রয়েছে৷ বাকি দু’জনেরও এলাকায় বিশেষ সুখ্যাতি নেই৷ প্রাথমিক তদন্তে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের অনুমান, এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি লেগেই ছিল৷ তার জেরে কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি মাটির তলায় পুঁতে রেখেছিল অভিযুক্তরা৷ এলাকায় গন্ডগোল পাকানোই মূল উদ্দেশ্যে ছিল ধৃতদের৷ রাতভর পুলিশি জেরায় অভিযুক্তরা পুলিশকে জানায় যে, বিহারের সাহেবগঞ্জ থেকে এই রাজ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছিল৷ তবে নির্বাচনের আগে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ৷ পুরনো বিবাদ নাকি রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ওই তিনজনকে কাজে লাগিয়ে কেউ বা কারা অস্ত্র মজুত করেছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
দেশজুড়ে ভোটের আবহ৷ রাজ্যের প্রতিটি বুথ স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে প্রতিপক্ষ বিজেপির তরফে৷ তারই মাঝে বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর আবারও মুর্শিদাবাদে এত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় নতুন করে চাপা আতঙ্ক দানা বাঁধছে স্থানীয়দের মনে৷ একের পর এক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে তদন্তকারীদেরও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.