শেখর চন্দ্র, আসানসোল: খনিগর্ভে অগ্নিকাণ্ড (Fire)। পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার সাতগ্রাম প্রোজেক্টে বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ আগুন লাগে। কয়লাখনির প্রায় ৮০০ ফুট গভীরে, খনিগহ্বরের সুড়ঙ্গের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খনির পরিত্যক্ত স্তরে এই আগুন লাগার ঘটনাটি প্রথম দেখতে পান কয়লা খনির (Coal Mine) শ্রমিকরাই। সঙ্গে সঙ্গে আধিকারিকদের ঘটনার খবর পাঠানো হয়। তাঁরা তড়িঘড়ি কয়লা খনির উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে তৎপর হন। এই ঘটনার পর খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কয়লা খনিগুলির নিরাপত্তা নিয়ে ইতিমধ্যে তরজা শুরু হয়েছে বাম ও তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার সাতগ্রাম প্রোজেক্টের খনির যে জায়গায় আগুন লাগে, সেখানে যাতে অক্সিজেন (Oxygen) না পৌঁছতে পারে, তার জন্য স্টপিং ওয়ালের ব্যবস্থা করা হয়। দেখা যায়, খনির উপরে জড়ো করা হয়েছে বালি, ইট-সহ বিভিন্ন সামগ্রী। যাতে আগুনের শিখার বাইরে ছড়িয়ে পড়া রুখে দেওয়া যায়। কয়লা খনির অভ্যন্তরে শুধুমাত্র অগ্নিনির্বাপক কর্মী ও উদ্ধারকারী দল কাজ করে বলে খবর। খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। শ্রমিকদের খনিতে নামতে নিষেধ করে দেওয়া হয়।
এর আগেও খনির অভ্যন্তরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল কুনুস্তরিয়া এরিয়ার, কুনুস্তরিয়া কোলিয়ারিতে। সেই সময় খনির অভ্যন্তরে এতটাই ভয়াবহ আগুন লাগে যে কয়েক বছর ধরে কয়লাখনি বন্ধ করে রাখতে হয়েছিল। খনি বাঁচাতে তরল নাইট্রোজেন স্প্রে করা হয়েছিল। তবে এক্ষেত্রে আগুনের ভয়াবহতা ততটা নয় বলেই দাবি করেছেন খনি কর্তৃপক্ষ।
উদ্ধারকারী দলের সদস্য রাজু মাজি বলেন, ”খনি গহ্বরের ৮০০ ফুট গভীরে ৮ নম্বর লেভেলের ৫ নম্বর ডিপে এই ধোঁয়া বের হচ্ছে। সেখানেই স্টপিং ওয়ালের কাজ শুরু হচ্ছে।” তৃণমূল (TMC) শ্রমিক সংগঠন সমর্থিত কেকেএসসি সম্পাদক কাজী আশরাফ বলেন, ”খনির ভিতরে আগুন লাগার ঘটনা স্বাভাবিক।” বাম (CPM) শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষে বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষার বিষয়টি অবহেলা করছে। শুধু মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে ঝুঁকি নিচ্ছে তারা। ট্রেড ইউনিয়নের সেফটি টিম খনিতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেওয়ার পরেই আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.