সুব্রত বিশ্বাস: শীতের কুয়াশায় দূষিত বায়ু উপরে উঠতে পারছে না। আর তাতেই চরম বিপদের আশঙ্কা বেলুড়জুড়ে। সার কারখানার বর্জ্য প্লাস্টিক জ্বালিয়ে পরিবেশকে ভয়াবহ দূষিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় মানুষজনও। রাতের অন্ধকারে প্লাস্টিকের বর্জ্যে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেই আগুনের ভয়াবহতা ক্রমশ গ্রাস করে চলেছে স্থানীয় মানুষজনকে। আগুনের ব্যাপকতা অনেক সময় এতটাই বাড়ে যে, আগুন আয়ত্তে আনতে দমকল আসে। প্লাস্টিকের আগুন থেকে এলাকায় এতটাই দূষণ ছড়াচ্ছে যে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষজন শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
‘টাইমটেক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সলিউশন’ নামে ওই কারখানার পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বিধায়ক তথা সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কারখানাটি ভয়ঙ্করভাবে পরিবেশকে দূষিত করছে। বহুবার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়তে বলার পরও নির্দেশ শোনেনি। এমনকী দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র দেখায়নি। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও সাবধান হয়নি কর্তৃপক্ষ। বালি গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদমারি ভাগাড়ে এই কারখানাটি গড়ে ওঠে। বালি পুরসভার সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ায় হাওড়া কর্পোরেশনের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করে সংস্থাটি। আগে বালি পুরসভার বর্জ্য সেখানে আনা হলেও পরে হাওড়া পুর এলাকার হাসপাতালগুলি ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের বর্জ্য এনে এই কারখানা চত্বরে ফেলা হয়। এর পর সেই বর্জ্য পচিয়ে মেশিনে প্লাস্টিক আলাদা করা হয়। টন টন জমা প্লাস্টিকে এর পর আগুন দেওয়া হয়।
[ রুটি ব্যাংকের একশো দিন, বিরিয়ানি খেলেন স্টেশনের ভবঘুরেরা ]
এটা রীতিমতো রেওয়াজে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাঁরা বলেন, সারা বছরই এই বর্জ্যে রাতে আগুন নিজেরাই ধরিয়ে দেয়। শীতকালে এই আগুন যে হারে দূষণ ছড়াচ্ছে তাতে এলাকার মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কুয়াশার সঙ্গে নিচের স্তরে নানা রাসায়নিক পদার্থ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফলে শ্বাসকষ্টের শিকার হচ্ছেন বয়স্ক থেকে বাচ্চারা। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, দৈনিক প্রায় ২০০ বস্তা জৈব সার তৈরি হয়। বর্ষাকালে জলের জন্য কাজ বন্ধ থাকে। ফলে বর্জ্যের পাহাড় তৈরি হয়। তা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। স্থানীয় মানুষজনের কথায়, এলাকাটি দূষিত হয়ে উঠেছে। পুকুর ও জলাশয়ে বর্জ্যের জমা জল এসে মিশে তা দূষিত করে তুলেছে। পুকুরগুলি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। পাশাপাশি প্লাস্টিক পোড়ানোর ফলে বাতাস দূষিত হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের সঙ্গে বাড়ি ঘরের রং খারাপ হচ্ছে। চোখের রোগ বাড়ছে।
স্থানীয় বালি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান আশিস ঘোষ বলেন, সমস্যা চরমে উঠেছে। ঠিকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এর পর পুরসভার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, সমাধানের রাস্তা কী। না হলে অন্য পথে যেতে হবে স্থানীয় সমস্যার জন্য।
[ ‘তোমরা নিজেরা শোধরাও’! যুযুধান দুই দলীয় নেতাকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.