স্টাফ রিপোর্টার, বারাকপুর: প্রায় ৩৮ ঘণ্টা টানা লড়াইয়ের পর অবশেষে নিয়ন্ত্রণে নিউ বারাকপুরের (New Barrackpore) বিলকান্দা এক নম্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তালবান্দা শিল্প তালুকের গেঞ্জি কারখানার আগুন। তবে কারখানার ভিতরে এখনও ধিকিধিকি আগুন জ্বলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে খবর। এখনও খোঁজ মেলেনি কারখানার চারজন কর্মীর। শুক্রবারও গোটা পরিস্থিতির তদারকি করেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস। কিন্তু অতিমারীর কারণে সরকারি কড়া বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও কারখানায় কীভাবে কাজ চলছিল, তা নিয়েই উঠছে বড়সড় প্রশ্ন।
বুধবার গভীর রাতে ভয়াবহ আগুন লাগে তালবান্দার গেঞ্জি কারখানায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি ওষুধের গোডাউনেও। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে দু’দিনে দমকলের মোট বাইশটি ইঞ্জিন নামানো হয়। নামানো হয় ফায়ার ফাইটার রোবটও। গতকাল নামে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের টিম। কারখানার অগ্নিকাণ্ডের জায়গা আপাতত ঠান্ডা করার কাজ চালাচ্ছে দমকল বাহিনী। আজ, শনিবার সকালে দমকল, পুলিশ, পিডব্লিউডি, সিভিল ডিফেন্স এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে কারখানার ভিতরে ড্রোন প্রবেশ করানোর কথা। বোঝার চেষ্টা করা হবে কারখানার ভিতরের পরিস্থিতি ঠিক কী। এখনও পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ চার কর্মীর। সেই কারণেই চিন্তিত নিখোঁজ কর্মীদের পরিবারের লোকেরা।
বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও ঘটনাস্থলে থেকে গোটা পরিস্থিতির তদারকি করেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস (Sujit Bose)। উপস্থিত ছিলেন দমকলের ডিরেক্টর এবং ডিজি। উপস্থিত ছিলেন বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, ছিলেন বারাকপুর ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি সুপ্রিয়া ঘোষ। দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস বলেন, “আগুন আপাতত নিয়ন্ত্রণে, এখন আগুন ছড়ানোর আশঙ্কা নেই। কিন্তু কারখানার ভিতরে দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে ধিকিধিকি আগুন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিল্ডিং প্রচণ্ড গরম হওয়ার কারণে ঠান্ডা করার কাজ চলবে। বিল্ডিংয়ে ফাটলও ধরেছে।” কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে দমকলমন্ত্রী বলেন, “দপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হবে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। কীভাবে আগুন লাগল খতিয়ে দেখা হবে তাও।” তবে কারখানার ভিতর পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলেই জানা গিয়েছে।
এদিকে এই অতিমারী পরিস্থিতিতে কারখানা খোলা রাখা নিয়ে অভিযোগ এনেছেন স্থানীয় এবং নিখোঁজ কর্মচারীদের পরিবারের লোকেরা। এই বিষয়ে বারাকপুর দু’নম্বর ব্লকের সভাপতি সুপ্রিয়া ঘোষ বলেন, “কারখানায় আগুন লাগার পর এই বিষয় নিয়ে আমার কাছে স্থানীয়রা এবং নিখোঁজ পরিবারের লোকেরা মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কারখানার কেউ এখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কারখানাটি বন্ধ থাকলে এই বিপদ এড়িয়ে যাওয়া যেত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হবে।” সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ঘটনায় কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.