Advertisement
Advertisement
Habra

সঞ্চয়ের অর্থ, বিয়ের গয়না পুড়ে ছাই, হাবড়া রেল কলোনিতে এখন সর্বহারাদের হাহাকার

হাবড়ার রেল কলোনিতে বুধবার অগ্নিকাণ্ডের জেরে ৩৩টি বাড়ি পুড়ে ছাই।

Fire at Habra rail colony left residents empty handed | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 15, 2022 9:20 pm
  • Updated:December 15, 2022 9:20 pm  

অর্ণব দাস, বারাসত: জমি কেনার জন্য একটু একটু করে ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছিলেন হরিদাস গায়েন। মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র দেখা হচ্ছিল। তাই গয়নাও বানিয়ে রেখেছিলেন দীপা মণ্ডল। বুধবার বিকেলে হাবড়া (Habra) রেল কলোনিতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের (Fire) জেরে এদের চোখের সামনেই সবকিছু ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও সরস্বতী গায়েন, মনিকা মোড়ল-সহ মোট ৩৩ জনের বাড়ি সর্বগ্রাসী আগুনের শিখায় ছাই হয়ে গিয়েছে। ঘরের জিনিসপত্র, পোশাক, বাসন-সহ গুরুত্বপূর্ণ নথিও পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় রাতে ত্রাণ শিবিরে ঘুম আসেনি কারও। তাই বৃহস্পতিবার ভোর হতেই আগুনের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে দেখা গিয়েছে অনেক বাসিন্দাকে।

হরিদাস গায়েনের কথায়, “ঘরের মধ্যে যা ছিল আগুনে সবকিছুই শেষ হয়ে গিয়েছে। জমি কেনার জন্য ৮০হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। সেটাও নেই। প্রাণটুকু ছাড়া সবই পুড়ে গিয়েছে।” ধ্বংস্তুপের মধ্যে বসেই কেঁদে চলেছেন দীপা মণ্ডল। তাঁর কথায়, “মেয়ের বিয়ের দেখাশোনা চলছিল। তাই গয়না বানিয়ে রেখেছিলাম। আগুনে সবই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। ঘর থেকে বেরিয়ে আমরা শুধু প্রাণে বেঁচেছি। এখন কী করব, বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: কুণাল ঘোষের তৎপরতায় কাটছে অন্ধকার, হলদিয়ার দুই গ্রামে বসছে বিদ্যুতের খুঁটি]

ঘরের জিনিসপত্র সঙ্গে জরুরি নথি ভোটার, প্যান, আধার কার্ড-সহ ‘স্বাস্থ্যসাথী’ ব্যাংকের বই পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সকলে। তাই জরুরি এই কাগজপত্রগুলি তৈরির করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে মনিকা মোড়ল, সরস্বতী গায়েনরা বলছেন, “আগুনে কিছুই বাঁচাতে পারিনি। সরকারের কাছে জরুরি নথিগুলি তৈরি করে দেওয়ার অনুরোধ রাখছি।” এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাহায্যের বিষয় নিয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriyo Mullick)। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভাব অভিযোগ শোনেন। আশ্বস্ত করেন সকলকে। এরপরেই মন্ত্রী যান হাবড়ার মডার্ন হাইস্কুলের অস্থায়ী ত্রাণ শিবির। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ১২৫ জন। আশ্রিত পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের জন্য ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তার সঙ্গে ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান নারায়ণচন্দ্র সাহা-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

[আরও পড়ুন: ১৭ বছর পরে গোধরা কাণ্ডে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তর জামিন সুপ্রিম কোর্টে]

এরপর এদিনই হাবড়া পুরসভায় পুলিশ, পুরসভা, বিদ্যুৎ এবং দমকল দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ”রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। এদিনই ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩টি ঘরের ম্যাপ নগরউন্নয়ন দপ্তরে পাঠানো হবে। অনুমোদনের পর আগামী সপ্তাহের শুরুতে নতুন ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। ঘর তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরেই থাকবেন।” রেলের জায়গায় বসবাসকারীদের ঘর পুড়ে গেল। অথচ সমবেদনা জানাতে রেলের কেউ আসেননি বলেও এদিন কটাক্ষ করেন তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement