সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ শিক্ষক দিবস। আর ঠিক এই বিশেষ দিনটিতেই আরও একবার কালিমালিপ্ত হল শিক্ষাঙ্গন। কিশোরী ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠল তার কোচের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালেই সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই জনপ্রিয় কোচের বিরুদ্ধে রিষড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাংলার ওই সোনাজয়ী প্রতিশ্রুতিমান কিশোরী সাঁতারুর বাবা।
তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, কিশোরীর মা-বাবা প্রথমটায় রিষড়া থানায় গেলেও কোচ সুরজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে অনীহা দেখিয়েছিল রিষড়া থানা। বরং উলটে তাঁদের পরামর্শ দিয়েছিল গোয়াতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কেননা, কিশোরীর পোস্ট করা ওই ভিডিও গোয়াতেই তোলা। গত ৬ মাস ধরে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হতে সে ক্লান্ত। তাই নিরুপায় হয়ে সবার সামনে ঘটনা তুলে ধরতেই গোয়ার ওই ঘটনা লুকিয়ে ক্যামেরাবন্দি করেছিল সে। কিন্তু ভিডিও-সহ যাবতীয় তথ্য সহকারে রিষড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাদের কথায় ভ্রুক্ষেপ-ই করা হয় না। তবে বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্লীলতাহানির কুরুচিকর ওই ভিডিও ভাইরাল হতেই টনক নড়ে রিষড়া থানার। অতঃপর বৃহস্পতিবার সকালেই কিশোরী সাঁতারুর দেওয়া বয়ানের ভিত্তিতেই সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় সংশ্লিষ্ট থানায়। তবে উষসী কাণ্ডে ‘জিরো এফআইআর’ চালু হওয়ার পরও কেন রিষড়া থানা প্রথমটায় ফিরিয়ে দিয়েছিল কিশোরীর মা-বাবাকে, তা নিয়ে কিন্তু একটা প্রশ্ন উঠছেই।
“আমি প্রতিবাদ জানালে কাউকে বলতে নিষেধ করতেন। ভয় দেখাতেন আমার কেরিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমি ভয়ে কাউকে কিছু বলতাম না।”
গত ৬ মাস ধরে যৌন হেনস্তার শিকার হচ্ছে বাংলার ওই প্রতিশ্রুতিমান কিশোরী সাঁতারু। কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নানা অছিলায় শরীর স্পর্শ করছেন তার, এমন বিস্ফোরক অভিযোগই এনেছে ওই কিশোরী। তবে আগোচরে হওয়া ওই ঘটনাকে সবার সামনে তুলতে ধরতে যে অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করেছে, তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। নিজেই নিজের মোবাইলে কোচের যৌন হেনস্তার ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেছে। কারণ, সেই ভিডিওই তার প্রতি হওয়া দীর্ঘ দিনের অশালীন আচরণের জ্বলন্ত প্রমাণ। তা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেই সাহায্য চাইল বাংলার প্রতিশ্রুতিমান ওই সাঁতারু।
ফাঁস হওয়া সেই ভিডিওয় পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, নানা ভাবে কিশোরীর সারা গায়ে, গোপনাঙ্গে স্পর্শ করলেন। কিছুক্ষণ বাদে তিনি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান। এরপর যথারীতি মোবাইলের ভিডিও রেকর্ডার অফ করে দেয় কিশোরী।
প্রতিশ্রুতিমান ওই কিশোরী সাঁতারুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গোয়ায় আসার পর থেকেই স্যর আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন। আমি প্রতিবাদ জানালে কাউকে বলতে নিষেধ করতেন। ভয় দেখাতেন আমার কেরিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমি ভয়ে কাউকে কিছু বলতাম না। কিন্তু, এই নোংরামি আমার পক্ষে আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই সব কিছু ফাঁস করার সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমি সাহায্য চাইছি।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.