সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অ্যাম্বুল্যান্স কাণ্ডে এবার বিপাকে দিলীপ ঘোষ। গত সোমবার কৃষ্ণনগরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে সভা চলাকালীন অ্যাম্বুল্যান্স আটকে বিতর্কে জড়ান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। সভায় অসুবিধা হবে বলে তিনি অ্যাম্বুল্যান্স ঘুরিয়ে দেন। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে দিলীপ ঘোষের কাণ্ডকারখানায়। এবার জানা গেল, ওই অ্যাম্বুল্যান্সে ছিলেন এক প্রসূতি। অ্যাম্বুল্যান্স আটকানোর দায়ে কৃষ্ণনগর কোতয়ালি থানায় দায়ের হল অভিযোগ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) সমর্থনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মিছিল করছে বিজেপি। সেই মতো সোমবার কৃষ্ণনগরে মিছিল করে গেরুয়া শিবির। রাজবাড়ি থেকে জেলা প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত মিছিলে হাঁটেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। তারপর জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি সভাও করা হয়। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সভামঞ্চ থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। এমন সময় একটি অ্যাম্বুল্যান্স সভাস্থলের কাছাকাছি এসে পৌঁছয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই অ্যাম্বুল্যান্সে সেই সময় রোগী ছিলেন। তবে সভার জেরে এলাকায় তীব্র যানজট হওয়ায় রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিল না। সভায় যোগদানকারী কেউ ওই অ্যাম্বুল্যান্সটিকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেনি। অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পড়ার ঘটনাটি নজর এড়ায়নি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও। তবে তা সত্ত্বেও অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেননি। পরিবর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘এখান দিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। লোকে রাস্তায় বসে রয়েছে। ডিস্টার্ব হয়ে যাবে। ঘুরিয়ে অন্য দিক দিয়ে নিয়ে যান।’’ বিজেপি রাজ্য সভাপতির এহেন অমানবিক আচরণ নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নিমেষেই। কীভাবে একজন সাংসদ এতটা অমানবিক হতে পারেন সেই প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
খবর পেয়েই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই অ্যাম্বুল্যান্সে ছিলেন এক প্রসূতি। তাঁর নাম মঞ্জিরা বিবি। তিনি নদিয়ার ধুবুলিয়ার বাসিন্দা। সেদিন কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাঁকে। এরপরই এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয় দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। যদিও প্রসূতির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অ্যাম্বুল্যান্স কাণ্ডের পর সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে মেজাজ হারান মেদিনীপুরের সাংসদ। দিলীপ ঘোষের সাফাই, “এ রাজ্যে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নেশার দ্রব্য, বোমা পাচার করা হয়। সভা বানচাল করতে ওই এলাকায় ফাঁকা অ্যাম্বুল্যান্সটি পাঠানো হয়েছিল।” তবে নেটিজেনদের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্স মোটেও ফাঁকা ছিল না। ‘অমানবিক’ কাজের দায় এড়াতে একথা বলছেন দিলীপ ঘোষ। প্রসূতি থাকার কথা চাউর হতেই অনেকে বলছেন, হয়তো মুসলিম বলে বিজেপি নেতা অ্যাম্বুল্যান্স আটকেছিলেন। কারণ সেদিন সভায় উপস্থিত প্রত্যেক কর্মী-সমর্থক দিলীপ ঘোষের এই ‘অমানবিক’ কাজে উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.