অর্ণব আইচ: হাতে টাকা নেই? তাতে অসুবিধা কী? অনলাইনে টাকা মেটালেই হবে। এই টোপ দিয়েই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান তথা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা যুবককে সোনাগাছিতে নিয়ে গিয়ে লুঠপাট চালাল যৌনকর্মীরা। নগদ টাকা না দিতে পারলেও অনলাইনে টাকা পাঠাতে বাধ্য হন যুবক। ৯০ হাজার টাকা খুইয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। তদন্ত করে চার যৌনকর্মীকে গ্রেপ্তার করলেন উত্তর কলকাতার বড়তলা থানার পুলিশ আধিকারিকরা। শেফালি বিশ্বাস, প্রতিমা সর্দার, টুম্পা দাস, সিটি বারুই নামে ওই চার যৌনকর্মীরা কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনও যৌনকর্মী যুক্ত কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার বড়তলা এলাকার সোনাগাছি দিয়ে হাঁটছিলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বাসিন্দা পঙ্কজ সিং নামে ওই যুবক। তাঁকে ডাকাডাকি শুরু করে কয়েকজন যৌনকর্মী। যুবক জানান, তাঁর কাছে বেশি নগদ টাকা নেই। তখন যৌনকর্মীরা তাঁকে আশ্বাস দিয়ে জানান, অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে একজন যৌনকর্মীর অ্যাাকউন্টে টাকা পাঠালেই হবে। সেই টোপ দিয়েই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ইমাম বক্স লেনের একটি বাড়িতে। সেখানে একটি ঘরে ঢুকিয়ে তাঁকে বাইরে থেকে আটকে দেওয়া হয়। ঘরের ভিতর ঢোকে চারজন যৌনকর্মী। যুবক কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। প্রথমে তারা তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। বলে, সে যে যৌনপল্লিতে এসেছে, তা তারা তাঁর পরিবারের লোকেদের জানিয়ে দেবে। এমনকী, অফিসেও তা জানিয়ে দেওয়া হবে। তাঁকে আটকে রেখে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, পুলিশকে খবর দিয়ে দেওয়া হবে। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করবে।
শেষে আতঙ্কে যুবক তাদের টাকা দিতে রাজি হয়ে যান। এক মহিলা যুবকের মোবাইল থেকে জোর করে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে ৪৪ হাজার টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে লেনদেন করে। তখনই তাঁর অ্যাকাউন্টে কত টাকা রয়েছে, তা জেনে নেয় ওই যৌনকর্মীরা। তারা নিজেদের অ্যাকাউন্টে জোর করে বাকি ৪৬ হাজার টাকা পাঠাতে বাধ্য করে। অনলাইনে টাকা লুঠের পর তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাড়িটি থেকে বেরিয়ে ঘুরতে ঘুরতে প্রথমে তিনি জোড়াসাঁকো থানায় যান। ঘটনার বিবরণ শুনে পুলিশের সহযোগিতায় তিনি বড়তলা থানায় যান। পুলিশ তাঁকে নিয়ে পুরো সোনাগাছি ঘুরে ইমাম বক্স লেনের ওই বাড়িটি খুঁজে পায়। সেখান থেকেই চার যৌনকর্মীকে ওই যুবক শনাক্ত করেন। চারজনকে গ্রেপ্তারির পর জেরা করে বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এর আগে ধৃত মহিলারা অন্য কারও কাছ থেকে লুঠপাট করেছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.