স্টাফ রিপোর্টার: পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই সোমবার শুরু হয়ে গেল প্রার্থীদের মনোনয়ন পর্ব। বেলা বাড়তেই বিভিন্ন জেলায় প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। অধিকাংশই ছিলেন শাসক দলের প্রার্থী। তবে বেশ কিছু এলাকায় বিরোধী দলের প্রার্থীরাও প্রায় নিঃশব্দে মনোনয়ন জমা দেন। এরই মধ্যে বীরভূমের লাভপুরে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় দু’পক্ষের ছ’জন জখম হয়েছেন।
ভোটের ঢাকে কাঠি পড়লেও এখনও অগোছালো বিরোধীরা। কারণ ৫০ শতাংশ আসনে মহিলা প্রার্থী জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন বিরোধী দলের নেতারা। অন্যদিকে শাসক দলের নেতাদের অনেকের আসন মহিলা হয়ে যাওয়ায় তাঁদের স্ত্রী অথবা বোন-মেয়েরাও প্রার্থী হচ্ছেন। এদিনই নবান্নে পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে খোলা হয়েছে বিশেষ নির্বাচনী সেল। ভোট সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে এই সেল। প্রায় ৫০ হাজার আসনে যখন প্রার্থী হতে তৃণমূলে মিছিল লেগে গিয়েছে, তখন প্রার্থী খুঁজতে হিমশিম বিরোধী পক্ষ। সিপিএম নেতৃত্ব নিশ্চিত নয়, ৫০ শতাংশ আসনেও শেষ অবধি প্রার্থী দেওয়া যাবে কি না। অন্যদিকে, বিজেপিও স্বীকার করেছে অন্তত ২০ শতাংশ আসনে তাদের প্রার্থী না-ও থাকতে পারে। তবে চেষ্টা চলছে। কংগ্রেসের অবস্থা আরও খারাপ।
বিরোধী দলের যখন অগোছালো পরিস্থিতি, সে সময় শাসক শিবিরে সাজ সাজ রব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দে্যাপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজ্য জুড়ে উন্নয়নের যে কর্মকাণ্ড চলছে, তাকেই এবার প্রচারের মূল হাতিয়ার করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, কোনওরকম অভিযোগ না থাকলে, পুরনো পদাধিকারীকেই আবার প্রার্থী করা হবে। সংরক্ষণ থাকলে অবশ্য অন্য কথা। সেই অনুযায়ীই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ সারা। জেলা পরিষদের বেশিরভাগ পদাধিকারীই ভোটে লড়বেন। যাঁরা আসন পাবেন না তাঁদের বলা হয়েছে, ভোটের পর পঞ্চায়েতের কাজেই ‘পুনর্বাসন’ দেওয়া হবে। টিকিট বিলি থেকে শুরু করে প্রতীক বিলির কাজও চলছে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে জেলায় জেলায় ইতিমধ্যে প্রত্যেককে আলাদা করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মনোনয়নই শুধু নয়, এর মধ্যে দেওয়াল লিখনের কাজও শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। তাদের শিবিরে যখন সাজ সাজ রব, বিরোধীরা রীতিমতো পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে ভোটের জন্য প্রস্তুত হতে না পারায়। রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা সিপিএম। অর্ধেক আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারবে না। এর প্রধান কারণ হিসাবে তারা জানিয়ে দিয়েছে, দুর্বল সংগঠন। উল্টোদিকে যে বিজেপি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে, তারাই জানিয়ে দিয়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আসনে তারা প্রার্থীই দিতে পারবে না। জেলায় জেলায় তৃণমূলের তরফে প্রচার চলছে জোরকদমে। প্রার্থীদের মধ্যে এখন মনোনয়ন জমা দেওয়ার হিড়িক। কেউ কেউ অভিনব মিছিল বের করেও মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন।
[দুবরাজপুরে বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী: ছবি বাসুদেব ঘোষ ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.