ছবি: প্রতীকী
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: অন্যান্য দিনের মতোই দুপুরবেলা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছিল প্রত্যুষ। আর পাঁচটা দিনের মতোই স্কুল ইউনিফর্মটা ছেড়ে বাথরুমে স্নান করতে ঢোকে সে। কিন্তু অনেকক্ষণ বাথরুম থেকে না বেরনোয় সন্দেহ হয় প্রত্যুষের মা কাঞ্চন জয়সওয়ালের। তিনি ডাকাডাকি করতে থাকেন প্রত্যুষকে। অবশেষে ধাক্কা দিয়ে বাথরুমের দরজা খুলতেই হতবাক হয়ে যান তিনি। দেখেন, বাড়ির আদরের ছোট ছেলে প্রত্যুষ শাওয়ারের সঙ্গে ঝুলছে। নিজের বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে ঝুলছে সে। প্রথমে প্রত্যুষকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা প্রত্যুষকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। খবর যায় হাওড়া থানায়। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রত্যুষ জয়সওয়াল নামে পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রটি হাওড়া ময়দানের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করত। ৬ নম্বর বৈকুণ্ঠ চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা প্রত্যুষ টিভিতে কার্টুন দেখতে ভালবাসত। ছাত্রটির পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, অনেক সময়ই টিভিতে কার্টুন দেখে তা নকল করার চেষ্টা করত পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্র। সেরকমই কিছু নকল করতে গিয়েই বাথরুমে ঢুকে ঝুলে পড়ে প্রত্যুষ। শাওয়ার থেকে বেল্ট ঝুলিয়ে তা গলায় পেঁচিয়ে নকল করার চেষ্টা করতে গিয়েই মৃত্যু হয় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের। কার্টুনকে নকল করতে গিয়েই তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান প্রত্যুষের বাবা রাকেশ জয়সওয়াল। কীভাবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রের মৃত্যু হল তা তদন্ত করে দেখছে হাওড়া থানার পুলিশ। প্রসঙ্গত, প্রত্যুষের বাবা পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তাঁর দুই ছেলের মধ্যে প্রত্যুষ ছিল ছোট ছেলে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্র বাথরুমে ঢুকে আত্মহত্যাই করেছে। কিন্তু কেন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়া ওই ছাত্র স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে বাথরুমে ঢুকে আত্মহত্যা করতে গেল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কার্টুন দেখা নকল করতে গিয়েই কি ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে, পরিবারের করা এই দাবিও খতিয়ে দেখছে হাওড়া থানার পুলিশ। এজন্য বাড়ির লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া বৈকুণ্ঠ চ্যাটার্জি লেনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.