কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: রোগীর আত্মীয়দের হাতে মহিলা ইন্টার্ন ডাক্তার নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ। প্রতিবাদে দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রবিবার রাত ১২টা থেকে ওই ঘটনায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Murshidabad Medical College) সব জুনিয়র চিকিৎসকরা পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে হাসপাতালে বসে পড়ে বিক্ষোভ (Sit for protest) শুরু করেন। রবিবার রাত থেকে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার আরজি জানিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন হাসপাতাল সুপার। তাঁর আরজিতে সাড়া দিয়ে সোমবার ভোর থেকে ফের কাজে যোগ দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
রবিবার দিনের বেলায় এক রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই রোগীর হাতে ফের ব্যান্ডেজ করার দাবি তোলেন আত্মীয়রা। কর্তব্যরত মহিলা ইন্টার্ন (Intern) চিকিৎসক স্বাতী কর সরকার ওই রোগীকে ছুটি দেওয়ার পর এমারজেন্সি (Emergency) বিভাগে অন্য রোগী দেখছিলেন। অভিযোগ, তাঁকে দেখে মেল সার্জিক্যাল ঘর থেকে বেরতেই ১০-১২ জন লোকজন মিলে ওই মহিলা চিকিৎসককে গালিগালাজ শুরু করে, মারধর করা হয়। স্বাতী কর সরকারের অভিযোগ, তাঁকে নিগ্রহের সময় কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। তিনি চিৎকার করতেই একজন নিরাপত্তারক্ষী ছুটে আসেন। তিনিও মার খান ওই রোগীর আত্মীয়দের কাছে। এই ঘটনার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেই কর্মবিরতি শুরু করেন বলে জানান।
রাত ১২টা থেকে তাঁদের কর্মবিরতি শুরু হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বাধ্য হয়ে তাঁদের সঙ্গে রাতেই আলোচনায় বসলেন হাসপাতাল সুপার। অন্যদিকে, ডাঃ আকাশদীপ ঘোষ ওই আন্দোলনে শামিল হয়ে বলেন, তাঁরা মাইনে বাড়ানোর দাবি করছেন না, ডিউটি কমাতেও বলছেন না। শুধুমাত্র নিরাপত্তা চান তাঁরা। এত বড় হাসপাতালে মাত্র ২০ জন নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে। ফলে উপযুক্ত নিরাপত্তা না পেলে তাঁদের পক্ষে পরিষেবা দেওয়া কষ্টকর। হাসপাতাল সুপার ডাঃ অমিয় কুমার বেরা, অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডাঃ অমরেন্দ্রনাথ রায়-সহ হাসপাতালের অন্যান্য আধিকারিকরা আন্দোলনকারী ইন্টার্নদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেন।
হাসপাতাল সুপার ডাঃ অমিয় কুমার বেরা বলেন, ওই মহিলা চিকিৎসক নিগৃহীত হয়েছেন বলে বহরমপুর থানার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। হাসপাতালে মোট ১০০ জন নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছেন। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা রক্ষী নেই সেকথা ঠিক বলে স্বীকার করেন হাসপাতাল সুপার। এছাড়া ওই আন্দোলনের কারণে হাসপাতালের পরিষেবা বিঘ্নিত হয়নি বলে দাবি করেন হাসপাতাল সুপার। এদিকে রাত্রি তিনটে পর্যন্ত ওই আন্দোলন চলার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর আশ্বাসে ৫০ থেকে ৬০ জন ইন্টার্ন ও জুনিয়র চিকিৎসকরা ফের কাজে যোগ দেন। তবে তাঁদের আন্দোলন চলাকালীন পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে বলে দাবি করেন রোগীর আত্মীয়রা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.