দেব গোস্বামী, বোলপুর: দেবীর আলতা মাখা চরণ-চিহ্ন স্থাপন হল ৫১ সতীপীঠ কঙ্কালীতলায়। সম্প্রতি, কঙ্কালীতলায় পুজো চলাকালীন হঠাৎই আচমকা পটের কাঠামোর কাঁচের ফ্রেম ভেঙে যায়। জখম হন বীরেশ্বর চক্রবর্তী নামে এক পুরোহিত। নিছক দুর্ঘটনা, নাকি অন্য অলৌকিক কারণে কঙ্কালীমাতা রুষ্ট হয়েছিলেন তা নিয়েই অগণিত ভক্তদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়।
শুক্রবার, হোম যজ্ঞ পুজোপাঠের মধ্যদিয়েই রূপোর চরণ-চিহ্ন প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভক্তদের পুজো দেওয়া ও চরণ ছুঁয়ে প্রণাম করার সুবিধার্থে তারাপীঠের আদলে চরণ স্থাপন হয়। কঙ্কালীমাতা ঠাকুরানি উন্নয়ন ট্রাস্টের দাবি, ‘‘ভক্তরা অনেকেই তারাপীঠের মতো মাকে ছুঁতে চান। এখানে মায়ের কোনও মূর্তি নেই। তাই গর্ভগৃহে প্রতিকৃতি সিংহাসনের সামনেই রাখা থাকবে দেবীর চরণ-চিহ্ন।’’ কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা কাঞ্চিদেশ উৎসব কমিটির সম্পাদক মহম্মদ ওহিউদ্দিন বলেন, ‘‘দূরদূরান্তের দেশ-বিদেশের পর্যটক সহ ভক্তরা চরণ স্পর্শ করে যাতে পুজো দিতে পারেন সেই উদ্দেশ্যেই দেড় কেজি রুপো দিয়ে মায়ের চরণ প্রতিস্থাপন করা হল। দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে।’’ কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে ও ট্রাস্টের আর্থিক সহায়তায় সিংহাসনে অভিষেকের মাধ্যমে চরণ যুগল বসানো প্রতিস্থাপন হয়। স্বাভাবিকভাবেই পুজো দিতে দূর-দূরান্তের পর্যটক সহ স্থানীয়রা ভিড় জমান কঙ্কালীতলা মন্দিরে।
কথিত আছে, সতীপীঠ কঙ্কালীতলায় পড়েছিল মা সতীর কাঁকাল। যে স্থানে এটি পড়ে সেখানে মাটি ধসে গিয়ে গর্ত হয়ে যায়। মন্দিরের পাশেই বয়ে যাওয়া কোপাই নদীর জল সেই গর্তে এসে কুণ্ডের সৃষ্টি হয়। এই কুণ্ডের সঙ্গে কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সরাসরি সংযোগ রয়েছে বলেও শোনা যায়। মন্দিরের সেবাইত বুদ্ধদেব ঠাকুর ও মহাদেব চৌধুরী বলেন, ‘‘নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পূজার্চনা, হোমযজ্ঞ মহোৎসবের মধ্যে দিয়েই দেবীর চরণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এবার থেকে দেবীর চরণ স্পর্শ করে পূজা দিতে পারবেন সকলেই।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.