সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: হোম কোয়ারেন্টাইনে চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি থেকে হাঁপিয়ে উঠে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন অনেকেই। তাঁদের ‘ফেসিলিটি’ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ‘নজরবন্দি’ করেও বিনোদনের ব্যবস্থা করেছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের আওতায় অর্থাৎ সরকারের নজরদারির মধ্যে এই ফেসিলিটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছে টিভি, গল্পের বই, সংবাদপত্র। যাতে ‘মেন্টাল ট্রমা’ কাটিয়ে ১৪ দিন পর একেবারে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন অস্থায়ীভাবে থাকা মানুষজন। এখানে মনোবিদদের দিয়ে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।
জেলায় আপাতত ৩৯টি ফেসিলিটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পরিকাঠামো গড়ে তুলছে প্রশাসন। কুড়িটি ব্লক মিলিয়ে ইতিমধ্যেই ২৩টি কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কথায়, “হোম
কোয়ারেন্টাইনে থাকা বেশ কিছু মানুষজন বাজারে বার হয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদেরকে ফেসিলিটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নজরবন্দি করে ভালভাবে রাখার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” এই কেন্দ্রগুলিতে সিসিটিভিও বসানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ফলে চব্বিশ ঘন্টাই তাঁরা প্রশাসনের নজরে রয়েছেন। এরকম ২৩টি সেন্টারের বর্তমান বাসিন্দা মোট ৩৩৯ জন।
পুরুলিয়ায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা ১৮,৭৬৪। এই বিপুল সংখ্যক মানুষজনকে ফি দিন শুধু ফোন খবর নিয়ে হেলথ কার্ড তৈরি করাই নয়, আশা,অঙ্গনওয়াড়ি, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ ও
প্রশাসনের সাধারণ কর্মীরা তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সামনে থেকে দেখে স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার একযোগে ১২,৫৫৯ জনের বাড়ি গিয়ে তাঁদের কুশল সংবাদ নেওয়া হয়েছে।
এই জেলায় কিছুদিন আগে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষজন ঘর থেকে বাইরে বার হয়ে আসায় জেলা জুড়ে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়। কারণ, হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা কয়েকজন শ্রমিকও। তাঁদের বাইরে বেরিয়ে আসার বিষয়টা অনেকেই ভালভাবে গ্রহণ করতে পারছিলেন না, অজানা আশঙ্কায় ভুগছিলেন। তাই ঘরবন্দি থেকে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া মানুষজনের জন্য পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন এই ফেসিলিটি কোয়ারেন্টাইন চালু করল। নিঃসন্দেহ তা অভিনব। প্রশাসনের আশা, এখানে কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড উপভোগ করবেন সকলেই।
ছবি: সুনীতা সিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.