রাহুল চক্রবর্তী: স্কুল যখন নাগরিক পরিষেবা কেন্দ্র!
তাও আবার ঐতিহাসিক সিঙ্গুরের মতো জায়গায়৷
স্কুলের দেওয়ালে লেখা এলাকার সমস্ত জরুরি পরিষেবা কেন্দ্রের ফোন নম্বর৷ স্কুলের নাম নরহরিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ বেড়াবেড়ি পূর্ব পাড়ায় নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এই স্কুলে৷ কামারকুন্ডু সার্কেলের অধীন ৬০টি স্কুলের মধ্যে একটি৷ শিক্ষক আছেন ৪ জন৷ সিঙ্গুর কারখানার ঘা ঘেঁষেই এই স্কুল৷ ফলে অন্যমাত্রাও বহন করছে৷ এলাকা ঘুরতে গিয়ে অন্য ছবিও দেখা গেল স্কুলে৷ স্কুলের দেওয়ালে লেখা থানা, দমকল, হাসপাতাল, বিডিও অফিস, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, সার্কেল অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ফোন নম্বর৷ স্কুল বন্ধ থাকলেও এলাকার মানুষ যাতে জরুরিভিত্তিতে এই ফোন নম্বর দেখতে পান, তার ব্যবস্থা করা আছে৷ দেওয়াল লিখন আছে স্কুলের বারান্দায়৷ ফলে বাইরে থেকেই গ্রামের মানুষজন দেখতে পাবেন দিনের যে কোনও সময়েই৷
কিন্তু স্কুলের দেওয়ালে এই ফোন নম্বর লেখার কারণ? প্রধান শিক্ষক মহেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সমাজের ক্ষুদ্র সংস্করণ হল স্কুল৷ সেই কারণেই মানুষ যাতে তার প্রয়োজন স্কুলে এসে জানতে পারেন, তাই এই জরুরিভিত্তিক নম্বরগুলি লিখে রাখা৷” স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে গ্রামবাসী, তাঁরা বিপদে পড়লে অন্য কোথাও না গিয়ে যাতে স্কুলেই আসেন, তার জন্য এই ফোন নম্বর লিখে রাখা হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা৷ প্রধান শিক্ষক জানান, গ্রামে সেইভাবে অ্যাম্বুল্যান্স নেই৷ তাই এই তালিকায় প্রথমে অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর দেওয়া যায়নি৷ এখন সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি সংস্থার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার ফোন নম্বর নথিভুক্ত করা হবে৷
পড়ুয়া সজল দাস বলে, “প্রধান শিক্ষকের ফোন নম্বর খাতায় লিখে রেখেছি৷ ছুটির দিনে বাড়িতে পড়তে গিয়ে সমস্যা হলে হেড স্যার ফোনেই বলে দেন৷” গ্রামবাসী প্রশান্ত দাস বলেন, “আমাদের এলাকার নরহরিপুর স্কুল শুধু স্কুল নয়, এলাকার সমস্যা সমাধানের কেন্দ্র৷ বাড়ির বাচ্চারা যেমন সেখানে শিক্ষিত হয়, তেমনই আমরা সব জরুরি পরিষেবার নম্বর যে কোনও সময় পাই৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.