রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: দিনকয়েক আগেই মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল রাজ্যে। পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টার মধ্যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ছিল হোয়াটসঅ্যাপে। তদন্তে নেমে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে সিআইডি। আর এবার পূর্ব বর্ধমানের কালনায় কলেজের পরীক্ষা চলাকালীনই ফেসবুকে লাইভ করলেন এক ছাত্রী।নিজের উত্তরপত্র শুধুই নয়, দু’দফায় ফেসবুক লাইভে প্রশ্নপত্রও দেখিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই ছাত্রীর অভিভাবককে ডেকে পাঠিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভুল স্বীকার করেছে ওই ছাত্রীও। তবে আপাতত তিনি আর পরীক্ষা দিতে পারবেন না বলে জানা গিয়েছে।
[ স্বপ্নাদেশ পেয়ে ভাইয়ের মুণ্ডচ্ছেদ! থানায় আত্মসমর্পণ অভিযুক্তের]
পূর্ব বর্ধমানের কালনা কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুলক্ষ্মণা মণ্ডল। কলেজে টেস্ট পরীক্ষা চলছে। শনিবার ছিল এডুকেশন পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালীন কলেজে মোবাইল নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ। শনিবারও যথারীতি পড়ুয়ারা মোবাইল বাইরে রেখেই পরীক্ষার হলে ঢুকেছিল। কিন্তু লুকিয়ে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা দিতে ঢুকেছিলেন সুলক্ষ্মণা এবং পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরেই ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। লাইভে বলতে থাকেন, “আমরা পরীক্ষা দিতে এসেছি। এই হচ্ছে প্রশ্নপত্র। কিচ্ছু জানি না। টেস্ট পরীক্ষা দিতে এসে টাইম পাশ করছি।” দু’দফায় প্রায় ১০ মিনিটেরও বেশি সময় ফেসবুকে চলে লাইভ। পরীক্ষা হলে কলেজ ছাত্রীর এমন কাণ্ডে হতবাক হয়ে যান অনেকেই। লাইভ চলাকালীন কমেন্টে অনেকেই সেকথা লিখেও দেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। কালনা কলেজের তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বিশ্বাস বলেন, “এই ঘটনাটি আপরাধমূলক। আমাদের কলেজের সম্মানহানি হয়েছে। আমরা চাই ওই ছাত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।” এমনকী, রাজ্যের শাসকদলের বদনাম করতেই পরিকল্পনামাফিক এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুলক্ষ্মণা মণ্ডলের অভিভাবককে ডেকে পাঠিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছে কালনা কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, মুচলেকায় মেয়ের হয়ে ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন সুলক্ষ্মণা মণ্ডলের অভিভাবকরাও। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন ওই কলেজ পড়ুয়াও। সুলক্ষ্মণা মণ্ডল বলেন, “আমার অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। মজা করার জন্য ফেসবুক লাইভ করেছিলাম। এখন খুবই খারাপ লাগছে। আমার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই।” কালনা কলেজের অধ্যক্ষ তাপস সামন্ত বলেন, ‘‘ওই ছাত্রী বসার আসন ছিল হলের পিছনের দিকে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র হাতে পাওয়ার পরই ফেসবুক লাইভ করতে শুরু করে। ঘটনায় আমরা হতবাক। গোটা বিষয়টি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” তবে আপাতত সুলক্ষ্মণা আর পরীক্ষা দিতে পারবেন না। এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই নেবে বলে জানা গিয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.