সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বন্যপ্রাণ নিয়ে ধারাবাহিক সচেতনতামূলক প্রচারের সুফল মিলল। পুরুলিয়ার বলরামপুরের জঙ্গলে পাথরের খাঁজে আটকে পড়া হরিণ শাবককে উদ্ধার করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দিলেন এক বৃদ্ধা। এই কাজের তারিফ করছে বনদপ্তর।
পুরুলিয়ার বলরামপুরের ঘাটবেড়া গ্রামে থাকেন ফুলমণি মান্ডি। রোজই অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে কাঠ কাটতে যান ওই বৃদ্ধা। গত শনিবারও বেশ কয়েকজন মহিলার সঙ্গে কাঠ কাটতে গিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় হুটুপাথর গ্রামের জঙ্গলে যখন কাঠ কাটছিলেন ফুলমণি, তখন তাঁর নজরে পড়ে পাথরে খাঁজে আটকে রয়েছে এক হরিণ শাবক। প্রথমে কিছুটা চমকেই গিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, আশেপাশেই হয়তো মা হরিণটিও আছে। তাই ঘটনাটি তেমন আমল দেননি ফুলমণি। পাশ কাটিয়ে নিজের কাজে চলে যান। ভুল ভাঙে ফেরার সময়ে। ততক্ষণে সন্ধে নামতে শুরু করেছে। ফুলমণি দেখেন, হরিণটি তখনও পাথরের খাঁজেই আটকে রয়েছে। এরপর অবলা প্রাণীটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান ওই বৃদ্ধা। ফুলমণি মান্ডির ছেলে অর্জুন স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য। তিনিই ফোন করে বনদপ্তরের খবর দেন। হরিণটিকে নিয়ে যান বনকর্মীরা।
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে হরিণের অভাব নেই। কিন্তু আগে হরিণ দেখলেই শিকার করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকী, যদি কোনও শাবকও ধরা পড়ত, তাহলেও হরিণের মাংসে চলত ভূরিভোজ। বলরামপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক সুবিনয় পান্ডা জানিয়েছেন, ‘বন্যপ্রাণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে আমাদের কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। বিভিন্ন এলাকায় লাগাতার প্রচার চালিয়েছিল আমরা।’ বনদপ্তর সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া শাবকটির বয়স বড়জোড় চার থেকে পাঁচদিন। আপাতত প্রাণীটিকে পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে সুরুলিয়া মিনি জু-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.