ধীমান রায়, কাটোয়া: চার মাসের কন্যাসন্তানকে মাটিতে আছড়ে মেরে খুনের অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে৷ পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের নাম মনোজ দাস৷ পুলিশি জেরায় অপরাধ কবুল অভিযুক্তের৷ শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে, পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের খুড়ুল গ্রাম৷
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বিছানায় শুইয়ে রেখে মা গিয়েছিলেন শৌচাগারে। শৌচাগার থেকে বেরিয়ে এসে দেখেন, শিশুটির গালে গভীর ক্ষত। অঝোরে রক্ত পড়ছে৷ যন্ত্রণায় ছটফট করছে শিশুটি৷ তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হল শিশুটির৷ শিশুমৃত্যুর পিছনে স্বামীর হাত থাকতে পারে বলে অভিযোগ তোলেন স্ত্রী পুতুল দাস৷ শনিবার দুপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেন পুতুলদেবী৷ দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ৷ মৃত শিশুর মা পুতুল দাসের অভিযোগ, কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ শিশুকে গাল কামড়ে অথবা মাটিতে আছড়ে মেরে খুন করেছে বাবা মনোজ দাস৷ পরে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
ভাতারের ভুমশোর গ্রামের বাসিন্দা ফুলেশ্বর দাসের ছোট মেয়ে পুতুলের প্রায় দেড়বছর আগে বিয়ে হয়েছিল খুড়ুল গ্রামের মনোজ দাসের সঙ্গে৷ মনোজের বাড়িতে থাকেন তার বিধবা মা ভাদু দাস। ভাই সুমন দাস ভিনরাজ্যে কাজ করেন। মনোজ রাজমিস্ত্রির জোগাড় বলে স্থানীয় সূত্রে খবর৷ পুতুলদেবী জানিয়েছেন, শনিবার সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ তাঁর মেয়ে লক্ষ্মীকে দুধ খাইয়ে তিনি শৌচাগারে চলে যান। তখন রান্নার কাজ শুরু করেছিলেন শাশুড়ি ভাদু দাস। পুতুলদেবী শৌচাগারে ঢুকতেই ঘুম থেকে ওঠেন তাঁর স্বামী মনোজ৷ এরপর শৌচাগার থেকে বেরিয়ে এসে পুতুলদেবী দেখতে পান, মেয়ে ছটফট করছে৷ ডানদিকের গাল বেয়ে রক্ত ঝড়ছে৷ রক্তাক্ত শিশুকে দেখে চিৎকার করতে থাকেন পুতুলদেবী৷ সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পরে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মৃত্যু হয় শিশুটির৷
[গঙ্গাজল ও গোবর জল দিয়ে বিজেপির সভাস্থল ‘পবিত্র’ করলেন তৃণমূলকর্মীরা]
পুতুলদেবীর মা কল্পনা দাসের অভিযোগ, ‘‘আমার মেয়ে কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই জামাই মনোজ দুর্ব্যবহার করছিল৷ শিশুটিকে কোনওদিন কোল থেকেও নামাত না পুতুল৷ একমাস আগেও শিশুটির গালে কামড়ে দিয়েছিল মনোজ৷ তখন, ভেবেছিলাম কোনও পোঁকামাকড়ে কামড়েছে৷ আমার কাছে রেখেই নাতনির চিকিৎসা করিয়েছিলাম৷ গত ১০ দিন আগেই মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠাই৷ কিন্তু, এই পরিণতি হবে তা ভাবতেই পারিনি।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.