রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বৃদ্ধ বাবা-মার ঠিকমতো দেখাশোনা না করার অভিযোগ বহু ছেলে মেয়ের বিরুদ্ধেই ওঠে। এই অভিযোগ যেন এখন আর নতুন নয়। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এক্কেবারে বিপরীত ঘটনার সাক্ষী। লকডাউনে আয় নেই বলে ছেলেকেই বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল জন্মদাতা বাবার বিরুদ্ধে। পুত্রবধূর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সুবিচারের আশায় রাস্তায় ধারেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ধরনায় বসলেন বৃদ্ধের ছেলে।
বিয়েতে প্রথম থেকে মত ছিল না পরিবারের। তা সত্ত্বেও কাঁথির মেহেবুব দাস ঠিক করেছিলেন বিয়ে করলে সুমিতাকেই করবেন। আর সুমিতাকে বিয়ে করতে না পারলে আজীবন অবিবাহিতই থাকবেন তিনি। সেই অনুযায়ী বেশ কয়েকমাস আগেই সুমিতার সঙ্গে বিয়ে করে নেন মেহবুব। যদিও বিয়ের পর প্রথমে বউমাকে স্বীকার করতে চাননি মেহবুবের বৃদ্ধ বাবা। অভিযোগ, পণও দাবি করেছিলেন তিনি। যদিও তা নিতে রাজি হননি মেহবুব। তাই দাবি মতো গয়নাগাটি কিংবা টাকাপয়সা কিছুই নিতে পারেননি মেহবুবের বাবা।
সুমিতার দাবি, অনেক অশান্তির পর শ্বশুর তাঁদের বাড়িতে থাকতে দেন। তবে অত্যন্ত অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। গৃহবধূর আরও অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে শ্বশুর, শাশুড়ি গয়নাগাটিও কেড়ে নেন। যার বর্তমান বাজারমূল্য অন্তত ১০ লক্ষ টাকা হবে। প্রতিবাদ করলেই কপালে জুটত চূড়ান্ত অপমান। ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন শুরু হয়। সেই সময় রোজগার বন্ধ হয়ে মেহবুবের। অভিযোগ, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় মেহবুব এবং সুমিতাকে।
বাধ্য হয়ে আপাতত ভাড়া বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। তবে বর্তমানে আর্থিক টালমাটাল থাকায় গয়না ফেরত চান মেহবুব এবং সুমিতা। কিন্তু অভিযোগ, গয়না কিছুতেই ফেরত দিচ্ছেন না ওই বৃদ্ধ দম্পতি। গত ১ জুলাই মন্দারমণি কোস্টাল থানায় বাবা এবং মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মেহবুব ও সুমিতা। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতেও যান। তবে তাদের দেখা পাননি। পরিবর্তে তালাবন্দি ঘর দেখে ফিরতে হয়েছে পুলিশকে। তাই বাধ্য হয়ে রবিবার ‘বিয়ের গয়না ফেরত দাও’ পোস্টার হাতে রাস্তার পাশে ধরনায় বসেছেন কাঁথির (Contai) দম্পতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.