সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: পারিবারিক অশান্তিকে কেন্দ্র করে বাবার হাতে খুন হল ছেলে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ থানা এলাকার খালচড়া এলাকার ঘটনা। এমন খুনের ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘাতক বাবাকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ খালচড়া এলাকার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব নুরজামাল মল্লিকের সঙ্গে তাঁর মেজ ছেলে আইজুল মল্লিকের বচসা বাঁধে। এই বচসা থেকে তর্কাতর্কি ক্রমে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়। উত্তেজনা চরমে উঠলে নুরজামাল কোদাল নিয়ে ছুটে যান ছেলে আইজুলের দিকে। অভিযোগ, ছেলের মাথায় ও পেটে কোদালের কোপ মারেন বাবা। ঘরের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছেলে। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রতিবেশী ও আত্মীয়-পরিজনরা আইজুলকে উদ্ধার করে প্রথমে খড়িবেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করেন।
পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। রবিবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ছেলেকে হত্যার অভিযোগে এদিনই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘাতক বাবাকে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় মামলা করে আলিপুর আদালতে তোলা হয়।
শুক্রবার রাতের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাবার সংসার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে কয়েকদিন ধরেই বাদানুবাদ চলছিল নুরজামাল ও আইজুলের মধ্যে। সংসারে চলছিল চরম অশান্তি। অশান্তির জেরে তিন মাসের ছেলেকে নিয়ে আইজুলের স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যান। আইজুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বাবার সংসার থেকে আলাদা হয়ে সে নিজে আলাদা বৈদ্যুতিক মিটার লাগাবে। সেই কারণেই বাড়ির পাশে আলাদা মিটার ঘর তৈরি করতে ভিতের মাটি কাটছিল আইজুল। অভিযোগ, ছেলের আলাদা হয়ে যাওয়া আটকাতে মিটার ঘরের জন্য ভিতের মাটি কাটতে বাধা দেন বাবা। আলাদা না হওয়ার জন্য ছেলেকে অনেক বোঝানও তিনি।
কিন্তু নাছোড় আইজুল বাবার কোনও কথায় কর্ণপাতই করেনি। ভিতের মাটি কাটতে থাকে ছেলে। তখনই রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বাবা নুরজামাল ছেলের হাত থেকে কোদাল কেড়ে নিয়ে সেই কোদাল দিয়েই তার মাথায় ও পেটে পরপর কোপ মারেন। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই লুটিয়ে পড়ে ছেলে আইজুল। নিছক উত্তেজনার বশে এমন কাণ্ড ঘটে যাওয়ায় সকলেই অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। শোকে থমথমে আইজুলের বাড়ি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.