সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ফের কৃষক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য বর্ধমানের জামালপুরে। সরকারডাঙার এক পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে এক চাষির ঝুলন্ত দেহ। পরিবারের অভিযোগ, গোলাম আম্বিয়া মল্লিক নামে ওই আলুচাষি অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন। মহাজনের থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন গোলাম। কিন্তু বাজারে পুরনো আলুর পর্যাপ্ত দাম না পেয়ে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আর তার জেরে মানসিক অবসাদে ভুগে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার রাতে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে গোলাম আম্বিয়া মল্লিকের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। পরিবার সূত্রে খবর, গত মরশুমে ৪ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। জমি থেকে তুলেছিলেন প্রায় ৫০ কেজি আলু অর্থাৎ সাড়ে বারোশো প্যাকেট। তার মধ্যে হাজার প্যাকেট আলুই হিমঘরে রেখেছিলেন গোলাম। মাঝে আড়াইশো প্যাকেট আলু বিক্রি করেছিলেন। বাজারে দাম না থাকায় হিমঘরের আলু আর বের করেননি।
[আন‘সেফ’ ড্রাইভ, হেলমেটহীন বাইক সওয়ারি হয়ে বিতর্কে বিধায়ক]
মৃতের বাবা গোলাম মর্তুজা মল্লিকের দাবি, গত তিন বছর আলুতে লোকসান হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি, মহাজনের কাছে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। হিমঘরে আলু রেখে এখন প্রতি প্যাকেটে ৪০ টাকাও দাম মিলছে না। ২০১৭ সালে পাঁচড়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার ঋণ এখনও শোধ হয়নি। ২০১৮ সালে আলু চাষের জন্য গোলাম সমবায় থেকে ফের ৮৬ হাজার টাকা ঋণ নেন। এছাড়া গয়না বন্ধক রেখে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন। মৃতের স্ত্রী জানিয়েছেন, ‘সমবায় ও মহাজনের লোকজন বারবার তাগাদা দিচ্ছিল টাকা শোধ করার জন্য। এসব কারণে কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন স্বামী।‘ একই দাবি পাঁচড়া পঞ্চায়েত প্রধান লালু হেমব্রমের। বিডিও সুব্রত মল্লিক গোটা ঘটনায় পুলিশ ও ব্লক কৃষি আধিকারিকদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.