বাবুল হক, মালদহ: বয়স মাত্র দেড় বছর। তার মধ্যেই বড়সড় বিপর্যয়। নির্মীয়মাণ ফরাক্কা ব্রিজের এক এবং দু’নম্বর পিলারের মাঝের গার্ডার লাগানোর সময় ওই অংশটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তাতে এখনও পর্যন্ত দু’জন ইঞ্জিনিয়ার-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন আরও অনেকেই। তাঁদের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। পরিকাঠামোগত ত্রুটি নাকি অন্য কিছু, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। দুর্ঘটনার দায় কার, সে বিষয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
ফরাক্কা ব্যারেজ থেকে কমবেশি ৫০০ মিটার দূরে শুরু হয়েছিল নয়া ওই সেতুর কাজ। মালদহ ও ফরাক্কা দুই প্রান্ত থেকেই সেতুর কাজ এগোচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ মালদহ প্রান্তে একটি স্তম্ভের উপর গার্ডার ‘সেট’ করার সময় তা ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যান কর্মরত শ্রমিক এবং বেশ কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার। মৃত্যু হয় প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাস, ট্রেনি ইঞ্জিনিয়ার শচীন প্রসাদ-সহ তিনজন মারা গিয়েছেন। জখম হয়েছেন আরও পাঁচজন। তাঁরা বর্তমানে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিকে, রবিবার রাতে খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বৈষ্ণবনগর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। এখনও পুলিশ ওই এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। সোমবার সকালে জারি উদ্ধারকাজ। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে এদিনই দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর।
ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির তত্ত্বাবধানেই তৈরি হচ্ছিল ওই ব্রিজটি। তৈরি করছিল RKEC নামে একটি সংস্থা। ব্রিজ বিপর্যয়ের নেপথ্যে ওই ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেনই বা রাতে কাজ চলছিল, দুর্ঘটনার পর উঠছে সেই প্রশ্নও। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছিল বলেই বিপর্যয়। এই ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবিতে সরব শাসক-বিরোধী প্রত্যেকেই। তৃণমূল বিধায়ক আবু তাহের তদন্ত করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরির গলাতেও একই সুর। তিনি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে বলেই পালটা আশ্বাস কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং মালদহের বৈষ্ণবনগরের বিজেপি বিধায়ক স্বাধীনকুমার সরকারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.