শিল্পী বাবু পাল।
সুমন করাতি, হুগলি: চলে গেলেন চন্দননগরের বিশিষ্ট আলোক শিল্পী সুপ্রতিম ওরফে বাবু পাল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। মঙ্গলবার আটটা চল্লিশ নাগাদ কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে জীবনাবসান হয় তাঁর। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে চন্দননগরজুড়ে শোকের ছায়া। বুধবার সকালে তাঁর দেহ চন্দননগরে বাসভবনে নিয়ে আসা হয়।
দেশ তো বটেই বিদেশের মাটিতে চন্দননগরের আলোর খ্যাতি অনেক দিনের। শহরে বহু আলোকশিল্পী রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের কাজের জন্য প্রসিদ্ধ। তবে চন্দননগরে ‘আলোর জাদুকর’ ছিলেন শ্রীধর দাস। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন বাবু পাল। কল্কা আর টুনি বাল্বের বিবর্তন ঘটিয়ে এলইডি আলো দিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন। সফল হন। সফলতার শীর্ষে পৌঁছন তিনি। তাঁর আলোকসজ্জা সাত বার গিয়েছে দুবাইয়ের ‘শপিং ফেস্টিভ্যাল-এ। ঢাকার দুর্গাপুজোয় আলোর রোশনায়ে ভরিয়ে দিয়েছেন। রাশিয়ার কৃষ্ণ মন্দিরও সেজেছে তাঁর আলোয়। দীপাবলিতে আরব সাগরের পারে বলিউড সুপারস্টার অমিভাত বচ্চনের তিনটি বাড়ি সেজে ওঠেছিল বাবুর তৈরি করা আলোয়। দুর্গাপুজোর কার্নিভালে রেড রোডকেও আলোর ছটায় সাজিয়ে ছিলেন তিনি। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আলোক সজ্জার জন্য ডাক পড়তো তাঁর। নিজের সৃষ্টিশীলতার জোরে চন্দননগরের আলোর শিল্পকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যান বাবু।
রাজ্য তথা ভারত ও বিদেশেও চন্দননগরের আলোকসজ্জা পরম্পরা বাবু পালের হাত ধরে অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে চন্দননগরের বহু বিশিষ্ট শিল্পীর হাত ধরে চন্দননগর আলোক শিল্পকলার নাম ছড়িয়ে পড়লেও আজ বাবু পালের চলে যাওয়াটা অনেক বড় ক্ষতি বলে মনে করেন চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি সম্পাদক শুভজিৎ সাউ জানান, “কোনও শিল্পীর মৃত্যু হয় না। তিনি তাঁর শিল্পকলায় সকল মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন। আজ বাবু পাল চলে যাওয়ায় চন্দননগরে যা ক্ষতি হল তা ভাষায় বলা যাবে না। আজ চন্দননগর বাসীর কাছে দুঃখের দিন।” বিশিষ্ট আলোক শিল্পী দিব্যেন্দু বিশ্বাস বলেন, “বাবু পালের চলে যাওয়াটা চন্দননগর আলোক শিল্পীদের কাছে অনেক বড় ক্ষতি। তিনি সকলের অভিভাবক ছিলেন। তাঁর শিল্পকলার অনুপ্রেরণায় আলোক শিল্পীরা আগামী দিনে এগিয়ে যাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.