Advertisement
Advertisement

Breaking News

ঝাঁড়ফুক

সাপের কামড়ে মৃত কিশোরী, ‘প্রাণ’ ফেরাতে দেহ বাড়িতে এনে দু’দিন ধরে ঝাড়ফুঁক!

ডিজিটাল যুগেও অন্ধ কুসংস্কার।

Family tries to revive dead snake bite victim at Kalna
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:July 1, 2019 8:45 pm
  • Updated:May 20, 2020 10:27 am  

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: ডাক্তারদের কথা বিশ্বাস হয়নি। উলটে মৃতদেহ বাড়িতে এনে চলল ঝাড়ফুঁক। পরিবারের লোকেদের বিশ্বাস ছিল, ঝাড়ফুঁকের জোরে ফের বেঁচে উঠবে মেয়ে! শেষপর্যন্ত গ্রামবাসীদের পরামর্শে ফের মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলেন পরিবারের লোকেরা। কুসংস্কারের ছায়া পূর্ব বর্ধমানের কালনায়।

[আরও পড়ুন: মূক ও বধির মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, অধরা অভিযুক্ত]

কালনা থানার অকালপৌষ গ্রামে বাড়ি যোগেশ মুর্মুর। গত শনিবার রাতে বাড়িতেই তাঁর ছোট বছর সতেরোর কবিতাকে সাপে কামড়ায়। রাতে যখন তাকে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ওই কিশোরীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু চিকিৎসকদের কথা বিশ্বাস হয়নি মৃতের পরিবারের লোকেদের। বরং স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শে হাসপাতাল থেকে লুকিয়ে মৃতদেহটি নিয়ে কালনার ধর্মডাঙা এলাকায় এক ওঝার কাছে চলে যান তাঁরা। জানা গিয়েছে, কবিতাকে ‘বাঁচিয়ে’  তুলতে রাতভর সেখানে চলে ঝাড়ফুঁক। শেষপর্যন্ত রবিবার ভোরে মেয়ের মৃতদেহ অকালপৌষ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন কবিতার পরিবারের লোকেরা। রবিবার দিনভর বাড়ির উঠানে দেহটি শুইয়ে রেখে চলে পূজাপাঠ ও প্রার্থনা। এমনকী, বিভিন্ন ধরণের টোটকাও প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু, মৃত মানুষের দেহে কী আর প্রাণ ফেরানো যায়! সোমবার সকালে যথারীতি মৃতদেহটি পচে গিয়ে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। তখন গ্রামবাসীদের পরামর্শেই ফের দেহটি কালনা হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। শেষ খবর অনুযায়ী, ওই কিশোরীর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। মৃতের বাবার আক্ষেপ, ‘মেয়েকে বাঁচাতে কোনও খামতি রাখিনি। যে যা বলেছে, তাই করেছি। কিন্তু ওকে বাঁচাতে পারলাম না।’ তাঁর বক্তব্য, ‘শুনেছি সাপের কামড়ে কেউ মারা গেলে, তাকে ফের বাঁচানো যায়। সেই বিশ্বাসেই এসব করেছি।’

Advertisement

ইদানিং কালনায় কুসংস্কারের প্রভাব বাড়ছে। সাপের কামড়ে রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া, ভুতের ভয়, নিশির ডাকের মতো গুজবে চাঞ্চল্য ছড়াচ্ছে। কালনা বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য তাপস কার্ফা বলেন, বারবারই কুসংস্কারের ঘটনা ঘটছে। সচেতনতা বাড়াতে প্রশাসনকেই এগিয়ে আসতে হবে। এদিকে কালনা হাসপাতাল থেকে কীভাবে লুকিয়ে মৃতদেহটি বের করে নিয়ে গেলেন পরিবারের লোকেরা, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

ছবি: মোহন সাহা

[আরও পড়ুন: নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে অভিনব উদ্যোগ, বিয়ের অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement