অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: মানসিক অবসাদ নাকি অন্য কিছু? পার্কসার্কাসে পুলিশকর্মীর ‘আত্মহত্যা’র কারণ ঘিরে তীব্র ধোঁয়াশা। এমন ঘটনা মানতে পারছেন না তাঁর পরিবারের কেউই।
কালিম্পংয়ের লোলে বস্তির সাধারণ পরিবারের ছেলে ‘আত্মঘাতী’ পুলিশকর্মী চোড়ুপ লেপচা। বাবা, মার মৃত্যু হয়েছে আগেই। বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দাদা ও বউদির সঙ্গে থাকতেন চোড়ুপ। আপাত ভদ্র, শান্ত চোড়ুপ গত বছরই পুলিশে চাকরি পান। উল্লেখ্য, পুলিশে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হয় চোড়ুপের বাবার। বছরখানেক আগে সেই চাকরির বিনিময়ে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। পার্কসার্কাসে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের ভিতরে ডিউটি করতেন।
পরিবার সূত্রে খবর, ১০ দিনের ছুটিতে গত ২৭ মে বাড়িতে এসেছিলেন। ৭ জুন পর্যন্ত ছিলেন কালিম্পংয়েই। ছুটি শেষের পর ৮ জুন ফের বাড়ি থেকে কলকাতায় ফিরে আসেন চোড়ুপ। নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী কাজেও যোগ দিয়েছিলেন। শুক্রবারও নিজের কাজই করছিলেন। সহকর্মীদের মতে, তাঁকে দেখে অস্বাভাবিক কিছুই মনে হয়নি। চা খেতে যাওয়ার নামে ডেপুটি হাই কমিশনের চৌহদ্দি থেকে বেরন তিনি। এরপরই বদলে যায় সব কিছু। একের পর এক গুলিতে শেষ হয়ে যান চোড়ুপ নিজেই। তাঁরই ছোঁড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক পথচারী মহিলারও।
আত্মহত্যার খবর টেলিভিশনের মাধ্যমেই জানতে পারেন চোড়ুপের পরিবারের লোকজন। কান্নায় ভেঙে পড়েন সকলে। কীভাবে ঘরের ছেলে এই কাজ করল, তা বুঝতেই পারছেন না চোড়ুপের বউদি। তিনি জানান, “১০ দিনের ছুটিতে বাড়ি এসেছিল। ২৭ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ছিল। মানসিক অবসাদে ভুগছে বলে বুঝতে পারিনি। ওকে দেখে স্বাভাবিকই মনে হয়েছিল। কেন এমন কাণ্ড ঘটাল কিছুই বুঝতে পারছি না।” চোখের জল মুছতে মুছতে চোড়ুপের বউদি জানান, “পরেরবার আরও বেশিদিনের ছুটি নিয়ে আসার কথা বলে গিয়েছিল। বিয়ে দেওয়া হবে বলেও ভাবনাচিন্তা চলছিল।”
তবে চোড়ুপের কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল না বলেই দাবি তাঁর বউদির। মানসিক অবসাদের তত্ত্ব একেবারেই মানতে নারাজ চোড়ুপের বোনও। শুক্রবার দুপুরে শেষবার চোড়ুপের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। দাদার দুঃখে কাতর তিনিও। নিজেকে সামলাতেই পারছেন না ‘আত্মঘাতী’ পুলিশকর্মীর বোন। আপাতত ঘরে ছেলের দেহ ঘরে ফেরার অপেক্ষায় চোড়ুপের পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.