সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: গ্রামের হাসিখুশি, মিশুকে ছেলেটার ছবি সকলের চোখে ভাসছে। গ্রামের সবাই মিস করছে তাঁকে। গ্রামের মানুষজন হঠাৎ করে তরতাজা ছেলেটির মৃত্যুর খবর পেয়ে একেবারে হতবাক। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশাহারা পরিবারও। বৃহস্পতিবার বেলায় রেড রোডে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জামবনির বিবেকানন্দ দাভে। খবরটা পাওয়ার পর থেকে মুখের কথা সরছে না মৃত পুলিশকর্মীর পরিবারের।
খবরটা পাওয়ার পর থেকে বিবেকানন্দের জামবনির বাড়ি সামনে তিল ধারণের জায়গা নেই। বাড়ির এক মাত্র রোজগেরে ছেলেকে অকালে হারিয়ে বাকরুদ্ধ দাভে পরিবার। কান্নার রোল চারিদিকে। কলকাতা ফোর্ট উইলিয়ামে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের চিচিড়া গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবেকানন্দ দাভে কলকাতা পুলিশ রিজার্ভ ফোর্সের কনস্টেবল। এদিন সকালে তিনি বাইক নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন। তখন ঘাতক বাসটির সামনে পড়ে যান। এই খবর চিচিড় গ্রামে পৌঁছতেই রীতিমত শোকের ছায়া নেমে আসে।
এদিন গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে বিবেকান্দের বাড়ি সামনে লোকে লোকারণ্য। তিল ধারণের জায়গা নেই। সকলের চোখে জল। আশিস দাভে এবং মিনতি দাভের একমাত্র ছেলে বিবেকানন্দ। ১৫ বছর আগে কলকতা পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। ছেলের সঙ্গে বাবা, মায়ের শেষ দেখা হয়েছে মাস খানেক আগে। জানা গিয়েছে, বিবেকানন্দ ঝাড়গ্রামে শ্বশুড়বাড়িতে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী জামবনি ব্লকের বেলদা হাইস্কুলের শিক্ষিকা। তাঁদের বছর আটের একটি ছেলে রয়েছে। তার লেখাপড়ার জন্য বিবেকানন্দ ঝাড়গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। এদিন দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই বিবেকানন্দের স্ত্রী কলকাতা চলে গিয়েছেন।
চিচিড়াতে বিবেকান্দন্দের বাবা আশিস কোয়ার্ক ডাক্তার। তাদের পরিবার এলাকায় বেশ পরিচিত। বিবেকানন্দ বাড়িতে এলে ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতেন, গল্পগুজবে মেতে উঠতেন। এদিন চিচিড়ার বাসিন্দা সুদীপ রানা বলেন, “ভাবতেই পারছি না ও আর নেই। আমরা ছোটবেলার বন্ধু। গ্রামে এলেই একসঙ্গে ওঠাবসা করতাম। শুধু আমাদের সঙ্গেই নয় গ্রামের সবার সঙ্গে দেখা করত ও। মিশুকে ছিল। আমরা খুব মিস করব।” বিবেকানন্দের তুতোভাই পবিত্র দাভে জানান,“ওর একটি মাত্র সন্তান রয়েছে।ওর বাবা-মা একেবারে ভেঙে পড়েছেন।” বিবেকানন্দের বাবা আশিস দাভে বলেন, “আমার একমাত্র ছেলে এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি। আমি কী করব! মাসখানেক আগে ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এই ভাবে বাবা-মাকে ছেড়ে চলে যাবে বুঝতে পারিনি?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.