অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: কেউ কলেজছাত্র। আবার কেউ কলেজের অস্থায়ী কর্মী। কেউ ধর্মপ্রাণ তো কেউ এলাকায় ভাল ছেলে হিসাবেই পরিচিত। এহেন যুবকদের আচমকা জঙ্গিযোগের কথা শুনে হতবাক মুর্শিদাবাদের ডোমকলের বাসিন্দারা। সত্যি হলেও ঘটনাটি মানতে গিয়েও চমকে উঠছেন তাঁরা।
বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার সকালে কেরলের এর্নাকুলাম ও পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ১১টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালান এনআইএর তদন্তকারীরা। মুর্শিদাবাদ থেকে ৬ জন আল কায়দা (Al-Qaeda) জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা হল ডোমকলের গঙ্গাধরপাড়ার বাসিন্দা নাজবুস সাকিব, ডোমকল পুরাতন বিডিও মোড়ের বাসিন্দা লিওন আহমেদ, জলঙ্গির সর্বপল্লি ঘোষপাড়ার বাসিন্দা আতিউর রহমান, মাইনুল মণ্ডল, জলঙ্গির মধুবোনার ইয়াকুব বিশ্বাস, রানিনগর মধ্যপাড়ার মুর্শিদ হাসান এবং কালীনগরের বাসিন্দা আবু সুফিয়ান। প্রত্যেকেরই জঙ্গিযোগের কথা জানতে পেরে হতবাক প্রতিবেশী এবং পরিজনরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্যবসায়ীর ছেলে নাজবুস (Najbus Sakhib) বসন্তপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে ছোট থেকে অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ। প্রতিদিন নিয়ম করে আজান দিত। এমন মিশুকে, ধর্মপ্রাণ ছেলেও নাম লেখাতে পারে জঙ্গিদের দলে, সে প্রশ্নই ভাবাচ্ছে সকলকে। আরেক ধৃত লিওন বসন্তপুর কলেজে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করে। সে-ও যে একাজ করতে পারে তা স্বপ্নেও কল্পনা করেননি কেউ। আতিউর করিমপুর কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কৃষকের মেধাবী সন্তানের এই পরিণতি অবাক করছেন সকলকেই। ধৃত মাইনুল এবং মুর্শিদ পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করত। আবু সুফিয়ান দর্জির কাজ করত। এই ধরপাকড়ের পর থেকে থমথমে গোটা এলাকা। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, নয়াদিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অতর্কিতে ‘লোন উলফ্’ হামলা চালানোর ছক কষছিল জঙ্গিরা। তবে গ্রেপ্তারির ফলে ভেস্তে গেল সমস্ত পরিকল্পনা।
জঙ্গি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদের পাশের জেলা নদিয়ার তেহট্ট মহকুমার একাধিক জায়গায় কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারি শুরু করে দিয়েছে মহকুমা পুলিশ। লাগানো হয়েছে সিসিটিভি। দুই জেলার সংযোগকারী সেতুগুলিতে চলছে নাকা চেকিং। শুধু তাই নয় পাশাপাশি ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাতেও চালানো হচ্ছে কড়া নজরদারি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.