শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়নি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে এভাবেই দেখছেন বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, খুন মানে অপঘাতে মৃত্যু৷ তাই হিন্দু রীতি মেনে মৃত্যুর চারদিনে পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করলেন বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ির পরিবারের লোকজন। বাঙালি সংস্কৃতিতে যাকে বলা হয় ‘চতুর্থী’ পালন। তাই করলেন ক্ষীরপাই শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের ভট্টাচার্য পরিবার। পালন করা হয়েছে অরন্ধন উপবাসও।
ক্ষীরপাই শহরের ভট্টাচার্য পরিবারের শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্যের কন্যা দীনময়ীকে বিয়ে করেছিলেন ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামের ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ছেলে ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি পরবর্তীকালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নামে বিখ্যাত হন। ১৮৩৪ সালে বিদ্যাসাগর দীনময়ী দেবীকে বিয়ে করেছিলেন। বিদ্যাসাগরের মতো বাঙালির বরেণ্য জামাইকে নিয়ে আজও গর্ববোধ করে ভট্টাচার্য পরিবার। বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ির বর্তমান অবস্থান ক্ষীরপাই শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডে। শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্যের বংশধর শংকরীপ্রসাদ ভট্টাচার্য মাসখানেক আগে মারা গিয়েছেন। সেই আদিবাড়ির ভগ্নাবশেষ আজও বর্তমান।
মঙ্গলবার সন্ধেয় বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরে মূর্তি ভাঙার দৃশ্য টিভিতে দেখেছিল গোটা ভট্টাচার্য পরিবার। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন ভট্টাচার্য পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ সদস্য গীতা ভট্টাচার্য। সারারাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি তিনি। মর্মাহত হয়ে পড়েন গীতাদেবীর বড় ছেলে উত্তম ভট্টাচার্য, ছোট ছেলে গৌতম ভট্টাচার্য-সহ বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা।
ঘটনা জানার পর তাঁদের মনে হয়েছে, বিদ্যাসাগরকে নৃশংসভাবে খুনই করা হয়েছে। ভট্টাচার্য পরিবারের ছোট ছেলে ক্ষীরপাই পুরসভার কাউন্সিলর। তিনি বলেন, “টিভিতে এবং সংবাদপত্র থেকে যা জানলাম, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা নয়, তাঁকে যেন নৃশংসভাবে খুনই করা হল। আমাদের ভাষা হারিয়ে গিয়েছে।’’ খুনের অর্থ অপঘাতে মৃত্যু। তাই বাঙালি রীতি মেনে শুক্রবার আমরা পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয়৷ পালন করা হয় অরন্ধন উপবাসও৷
দেখুন ভিডিও:
ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.