Advertisement
Advertisement
বিশ্বজিৎ বিশ্বাস

দু’দিনের মধ্যে হারিয়েছেন দুই ছেলেকে, শোকস্তব্ধ কাঁকিনাড়ায় মৃত বিশ্বজিতের পরিবার

সূত্রের খবর, এই ঘটনায় শাহবাজ আহমেদ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷

Family member of Biswajit Biswas felt upset over his sudden death
Published by: Tanujit Das
  • Posted:September 15, 2019 2:18 pm
  • Updated:September 15, 2019 4:42 pm  

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: দু’দিন আগেই দাদা মারা গিয়েছে। সেই খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ট্রেনে চেপে বিহার থেকে বাড়ি আসছিলেন ভাই বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর আর বাড়ি ফেরা হল না। নৈহাটির বদলে ভুল করে কাঁকিনাড়া স্টেশনে নেমে পড়াই কাল হল তাঁর। গভীর রাতে সেখানে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর প্রাণভয়ে পালাতে চেষ্টা করেন ঠিকই। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে না। দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমায় গুরুতর জখম হন বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷ ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পৌঁছয় বিশ্বজিতের বাড়িতে। মাত্র দু’দিনের মধ্যে অকালে দুই ছেলেকে হারিয়ে আকাশ ভেঙে পড়ে বিশ্বজিতের মা তাপসী বিশ্বাসের মাথায়। বিশ্বজিতের পরিবারে এখন নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

[ আরও পড়ুন: এবার দিঘায় বেড়াতে গিয়ে এই জিনিসটির মজা নিতে পারবেন না, কী জানেন? ]

Advertisement

জানা গিয়েছে, নদিয়ার ভীমপুর থানার নতুনপাড়া গ্রামে বাড়ি বিশ্বজিতের। তাঁর বাবা আশিস বিশ্বাস থাকেন আহমেদাবাদে। বাবার সঙ্গে মায়ের দীর্ঘদিন সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন। বিশ্বজিৎ এবং তার দাদা সত্যজিৎকে নিয়ে থাকেন তাঁর মা তাপসীদেবী। বড় ছেলে সত্যজিৎ এবং ছোট ছেলে বিশ্বজিৎকে খুবই কষ্ট করে বড় করেছেন তিনি। তাদের নিয়ে তাপসী দেবীর চোখে ছিল একরাশ স্বপ্ন। দুই নাতিকে ভীষণ ভালোবাসেন দাদু হরেন মণ্ডল ও দিদিমা গিরিবালা মণ্ডল। দুই নাতিই বিহারে ডাক্তারি
করতেন। দাদু, দিদিমা ও মায়ের ভরণপোষণের জন্য বিশ্বজিৎ ও তার দাদা সত্যজিৎ বিহার থেকে টাকা পাঠাতেন। এরই মধ্যে ভীমপুরের নতুন পাড়া গ্রামের প্রতিবেশী একটি মেয়েকে ভীষণ ভালবেসে ফেলেছিলেন বিশ্বজিতের দাদা সত্যজিৎ। কার্যত ভালবাসার টানেই দিন পাঁচেক আগে বিহার থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে এসেন তিনি। কিন্তু প্রেমে ধাক্কা খান সত্যজিৎ। চরম মানসিক আঘাতে গত বৃহস্পতিবার দাদুর বাড়িতে আত্মহত্যা করে বসেন তিনি। দাদার আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ পেয়ে
কার্যত মাথার ঠিক ছিল না বিশ্বজিতের। তড়িঘড়ি বিহার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল প্রসেনজিৎ নামে তারই এক বন্ধু। কিন্তু ক্লান্তি আর অবসাদে ট্রেনের মধ্যেই চোখ লেগে গিয়েছিল বিশ্বজিতের। রাতের অন্ধকারে ভুল করে তিনি নৈহাটির বদলে কাকিনাড়া স্টেশনে নেমে পড়েছিলেন তিনি। আর সেখানেই দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে প্রাণ যায় যুবক বিশ্বজিতের।

[ আরও পড়ুন: দিনহাটায় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি-বোমাবাজি, কাঠগড়ায় বিজেপি ]

বিশ্বজিতের পরিবার সূত্রে খবর, মৃত্যুর খবরটি ভোরের দিকে বাড়িয়ে পৌঁছয়। তখনও পর্যন্ত বড় ছেলের শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি বিশ্বজিতের মা। তারই মধ্যে ছোট ছেলের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ভেঙে পড়েন তিনি। ছুটে যান কাঁকিনাড়ায়। শনিবার বিশ্বজিতের বাড়িতে ভিড় করেছিলেন প্রতিবেশীরা। ভাইপো বিশ্বজিতের ছবি বুকে নিয়ে বেঘোরে কাঁদছিলেন, তাঁর পিসি সন্ধ্যা বিশ্বাস। বিশ্বজিতের খুনীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। দুই নাতির মৃত্যু মানসিক ভাবে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না দাদু-দিদিমাও। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় শাহবাজ আহমেদ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement