মৃত তৃণমূল উপ-প্রধানের স্বামী আবুল নাসার।
অর্ণব দাস, বারাসত: মন্দারমণির হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে আমডাঙার তৃণমূল নেতার দেহ। পুলিশের অনুমান, বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন উপপ্রধানের স্বামী। স্ত্রীর দাবি, কোনও সম্পর্কের টানাপোড়েন নয়, স্বামী ‘খুন’ হয়েছেন ব্যবসায়িক কারণে। বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কের কথা মানতে নারাজ তিনি।
আমডাঙা ব্লকের আধহাঁটা পঞ্চায়েতের কাছারিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন বছর চৌত্রিশের আবুল নাসার। তাঁর স্ত্রী সুমাইয়া পারভিন আধহাঁটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। দুই ছেলে, মেয়ে এবং বাবা মাকে নিয়ে তাঁর সংসার। উপপ্রধান স্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে এলাকায় কাজ করার পাশাপাশি, আবুল জেসিবি মেশিন ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এলাকার এক বন্ধুকে নিয়ে সমুদ্র সৈকত মন্দারমণিতে ব্যবসার ১০ লাখ টাকা আনতে গিয়েছিলেন আবুল। এরপরই শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে আমডাঙার বাড়িতে।
হোটেল সূত্রে খবর, দুই মহিলা এবং এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার মন্দারমণির ওই হোটেলে ওঠেন আবুল নাসার। এক মহিলাকে ওই সন্ধ্যায় হোটেল থেকে চলে যেতে দেখেন সকলে। তৃণমূল নেতা-সহ তিনজন সেই সময় হোটেলেই ছিলেন। এরপর শনিবার সকালে দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও, ওই ঘর থেকে কারও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে হোটেল কর্মীরা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ঝুলন্ত অবস্থায় উপপ্রধানের স্বামীকে দেখতে পান হোটেল কর্মীরা।
বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণেই তৃণমূল নেতা আত্মঘাতী হয়েছে বলে পুলিশ অনুমান করলেও, মৃতের স্ত্রী সুমাইয়া পারভিন এবং পরিবারের অন্যান্যরা অবশ্য আত্মহত্যার তথ্য মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি আবুল নাসারকে খুন করা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী সুমাইয়া পারভিন জানিয়েছেন, “আমাদের ব্যবসার প্রায় ১০ লাখ টাকা বাকি পড়েছিল। সেই টাকা আনতে যাচ্ছি বলেই আমাকে জানিয়েছিল ও। যাওয়ার সময় আমি ব্যাগ গুছিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, বুঝতে পারছি না।” তাঁর স্বামীর সঙ্গে কোনও তরুণীর সম্পর্ক ছিল, এমনটা জানেন না বলেও জানান উপ-প্রধান। এই প্রসঙ্গে আমডাঙা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, “আবুলের মৃত্যু রহস্যজনক। কী কারণে মৃত্যু পুলিশ তদন্ত করলেই পরিষ্কার হবে। তবে, তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই। আবুল দলের সক্রিয় নেতৃত্ব ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দলের ক্ষতি হল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.