Advertisement
Advertisement

Breaking News

ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু

মাসির বাড়ি থেকে আর ফেরা হল না, ট্রেন থেকে পড়ে মৃত যুবকের পরিবারে হাহাকার

শেওড়াফুলিতে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বরানগরের আরেক যুবকের।

Families of two men killed in train mishap mourn the demise
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 5, 2019 4:44 pm
  • Updated:November 5, 2019 4:44 pm  

দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: শ্রীরামপুরে গিয়েছিলেন মাসির বাড়ি। সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরা হল না। সোমবার রাতে চলন্ত লোকাল ট্রেনের ভিড়ে ঠাসা কামরা কেড়ে নিল প্রাণ। ফেরার পথে এভাবেই অসতর্কতার বলি হলেন হুগলির বছর চব্বিশের যুবক সুবীর কুণ্ডু। ছেলে নেই, একথা যেমন এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না মায়ের, তেমনই মাসির কাছেও অবিশ্বাস্য ঠেকছে, কীভাবে সুস্থ ছেলেটা এমন নিথর হয়ে গেল!

চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য হাওড়া মেন লাইনের ট্রেনগুলিতে বাড়তি ভিড়। সেই ভিড়ের মধ্যেই শ্রীরামপুর থেকে ব্যান্ডেল লোকালে উঠেছিলেন হুগলির কাপাসডাঙার বাসিন্দা সুবীর কুণ্ডু। শ্রীরামপুরে তিনি গিয়েছিলেন মাসি শেফালি দাসের বাড়ি। সেখান থেকে রাতে বাড়ি ফেরার জন্য ভিড়ে ট্রেনেই উঠে পড়েন সুবীর। তখন টেরও পাননি, বিপদ কীভাবে ওঁৎ পেতে বসে আছে। শেওড়াফুলি স্টেশন পেরতে কেবিনের কাছে একটি পোস্টে ধাক্কা লাগে সুবীরের। পিঠের ব্যাগে ধাক্কা লেগে তিনি পড়ে যান রেলট্র্যাকের উপর। তাঁর শরীরের উপর দিয়ে চলে যায় ওই ট্রেন। নিথর হয়ে পড়ে থাকেন সুবীর।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘কুকুরের মাংস খান শরীর ভাল থাকবে’, বিদ্বজ্জনদের আক্রমণ দিলীপ ঘোষের]

ট্রেনের আরও এক যাত্রীরও এমনই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে। তিনি বরানগরের বাসিন্দা বছর পঁচিশের ভিকি সিং। সুবীর পড়ে যাওয়ার পর টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান এবং ট্রেনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁরও। জিআরপি সূত্রে খবর, বরানগরের বাসিন্দা ভিকি চুঁচুড়া যাচ্ছিলেন এক বন্ধুর বাড়ি, বিশেষ কাজে। কিন্তু কাজ আর হল না।

শেফালি দাস আদরের বোনপোর এমন অকালমৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর বাড়ি থেকে ফেরার পথে এমনটা ঘটে গেল, এই ভাবনাতেই কেঁদে আকুল হয়ে পড়ছেন তিনি। শেফালি দাস জানান, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ বাইরের কাজ সেরে বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, সুবীর শুয়ে আছে। তাঁকে ডেকে তুলে দুপুরে খাওয়ান। বিকেল চারটে নাগাদ সুবীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর রাতেই ঘটনার খবর পেয়ে শেওড়াফুলি জিআরপিতে ছুটে গিয়ে সুবীরের দেহ শনাক্ত করেন শেফালি দেবী। তিনি বলেন, ‘ভীষণ ভাল ছেলে ছিল। মাঝেমধ্যেই আমার কাছে বেড়াতে চলে আসত।’ কিন্তু বোনপোর যে এমন পরিণতি হবে, একথা এখনও তিনি ভাবতে পারছেন না।

[আরও পড়ুন: চোরাই মোবাইল অন হতেই পুলিশের জালে বর্ধমানের আইনজীবী খুনে মূল অভিযুক্ত]

কাপাসডাঙার বাড়িতে সুবীরের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই মৃতের বাবা মা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। এলাকার মানুষজন বলছেন, সুবীর অত্যন্ত ভাল ও মিশুকে ছিল। বাবা, মা, ছোট ভাইকে নিয়ে চার জনের সংসার। সুবীর বাড়ি বাড়ি গ্যাস ডেলিভারির কাজের পাশাপাশি টোটো চালিয়ে সংসার চালাত। ছোট ভাই কেটারিংয়ের কাজ করলেও আয় সেরকম নয়। তাই সুবীরের উপরেই বেশি নির্ভরশীল ছিল গোটা পরিবার। এই পরিস্থিতিতে সুবীরের মৃত্যু গোটা কুণ্ডু পরিবারের কাছে যেন বিনা মেঘে বজ্রপাতের সমান। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দুটি দেহই পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে জিআরপি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement