সোমনাথ পাল, বনগাঁ: জাল ভোটার কার্ড চক্রের সঙ্গে এবার নাম জড়াল বনগাঁর এক বিজেপি নেতার৷ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সোমবার রাতে রেটপাড়া এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ৷ ধৃতের নাম অমিত রায়৷ তার কাছ থেকে মিলেছে প্রচুর জাল ভোটার কার্ড, হলোগ্রামবিহীন ভোটার কার্ড, ভুয়ো লাইসেন্স ও মহকুমা শাসকের স্ট্যাম্প৷ পুলিশের দাবি, ধৃত ব্যক্তি বনগাঁ পৌরমণ্ডলের বিজেপির সহ-সভাপতি৷ একই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে মঙ্গলবার সকালে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ দু’জনকেই মঙ্গলবার আদালতে তোলা হয়৷
[উদয়পুর সৈকতে বাংলার সীমানা ‘দখল’, রাজ্যের ফলক ভাঙল ওড়িশা সরকার]
জানা গিয়েছে, ধৃত অমিত রায় বনগাঁর রেটপাড়া এলাকায় একটি জেরক্সের দোকান চালায়৷ সেই দোকানের আড়ালেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে জাল ভোটার কার্ড তৈরির চক্র৷ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে ওই দোকানেই তল্লাশি চালান বনগাঁ থানার পুলিশ৷ সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১৫০টি জাল ভোটার কার্ড, ১৬টি ভারতীয় হলোগ্রামবিহীন ভোটার কার্ড, ৩০টি জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বনগাঁ মহকুমা শাসকের স্ট্যাম্প৷ মহকুমা শাসকের স্ট্যাম্প কেমনভাবে ধৃতের কাছে পৌঁছাল তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে৷ এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কার্যত হতবাক হয়ে যান বনগাঁর মহকুমা শাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়৷ ঘটনাটি সম্পর্কে এখনও কিছু জানলেও দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি তোলেন তিনি৷ জানান, নিজেও পুলিশি অভিযোগ দায়ের করবেন৷
সূত্রের খবর, দোকানের থাকা জেরক্স মেশিন, স্ক্যানার মেশিন, ল্যামিনেশন মেশিনের দ্বারা দীর্ঘদিন ধরেই এই চক্র চালাচ্ছিল ধৃত৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত বনগাঁ পৌরমণ্ডলের বিজেপির সহ-সভাপতি৷ তাকে জেরা করেই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও একজনের সন্ধান পান তদন্তকারীরা৷ সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবার সকালে গঙ্গানন্দপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হাসানুর মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে৷ জানা গিয়েছে, সীমান্ত পেড়িয়ে বেআইনি ভাবে যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে তাঁদের জন্য জাল ভোটার কার্ড বানিয়ে দেওয়ার কাজ করত ধৃতেরা৷ এই চক্রের সঙ্গে বনগাঁ মহকুমা আদালতের কয়েকজন মুহুরিরও যোগ পাওয়া গিয়েছে৷ তাঁরা নিয়মিত ওই জেরক্সের দোকানে যাতায়াত করতেন বলে জানা গিয়েছে৷ অনুমান, পুলিশের জালে ধরা পড়া অনুপ্রবেশকারীদের জন্য জাল ভোটার কার্ড তৈরির উদ্দেশেই ওই দোকানে যাতায়াত করতেন তাঁরা৷
[বালুরঘাটে বিজেপি প্রার্থীর অপহরণ ঘিরে চাঞ্চল্য, কাঠগড়ায় তৃণমূল]
মঙ্গলবারই ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়৷ তাঁদের দু’জনকেই দশদিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আদালতে আপিল করে পুলিশ৷ এই ঘটনায় বিজেপি যোগ থাকায় আক্রমণ শানিয়েছে জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেস৷ দলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি জানান, গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে তৃণমূলস্তর পর্যন্ত সকলেই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত৷ যদিও ধৃতের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন বিজেপির জেলা নেত্রী দেবশ্রী বিশ্বাস৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.