সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের জেরে অনেকেই চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা। এই সুযোগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরও ছড়াচ্ছে বিদ্যুৎ গতিতে। ভুয়ো খবরে যাতে আতঙ্কের সৃষ্টি না হয়, প্রশাসনের তরফে সে ব্যবস্থা করা হলেও এই মহামারী নিয়ে গুজব, রটনা নেটদুনিয়ায় এখনও অব্যাহত। দিন কয়েক আগেই নুসরত জাহানের সংসদীয় কেন্দ্র বসিরহাটের এক ‘ক্ষুধার্ত’ বৃদ্ধের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন যে, লকডাউনে খাবার না পেয়ে ২ দিন তিনি অভুক্ত। ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই ঘটনা খতিয়ে দেখতে ময়দানে নামে রাজ্য পুলিশ। এরপরই সেই ভুয়ো ভিডিওর পর্দা ফাঁস হয়।
ঠিক কী হয়েছিল? দিন কয়েক আগে রাজ্য বিজেপির ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। যেখানে এক বৃদ্ধকে আর্তনাদ করে বলতে শোনা যায় তিনি ২ দিন ধরে অভুক্ত। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বৃদ্ধ করুণ আর্তি জানিয়ে বলছিলেন- “মা আমাদের বাঁচান৷ আমরা আপনার সন্তান৷ আমাদের একটু দেখুন৷ আমরা দু’দিন ধরে কিছু খাইনি৷ আর সহ্য করতে পারছি না৷ এবার হয় খেতে দিন, নাহলে আমাদের গুলি করে মেরে ফেলুন।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তিনি ওই একই আবেদন জানিয়েছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান এবং সিপিএম বিধায়ক রফিকুল ইসলামের কাছেও৷ এই ‘সাজানো’ ভিডিওটি শেয়ার করেই বঙ্গ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, “শুনতে পাচ্ছ কি মানুষের কান্না? তৃণমূল রেশন লুট বন্ধ করুন!”
এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই নেটদুনিয়ায় জোর শোরগোল বাঁধে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ছি ছি-কার পড়ে যায়। সমালোচিত হন নুসরতও। এরপরই রাজ্য পুলিশ ময়দানে নেমে রহস্য ভেদ করেন। ওই বৃদ্ধের ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং ইচ্ছেকৃভাবে শুট করানো বলে দাবি করা হয়েছে তাঁদের পক্ষ থেকে। ওই বৃদ্ধ আদতে যাত্রাশিল্পী, তাই তাঁকে অভিনয়ের কথা বলা হয়েছিল। এপ্রসঙ্গে ওই বৃদ্ধ যাত্রাশিল্পী পুলিশকে জানিয়েছেন, “আমার নাম মোবারক মণ্ডল৷ আমার বাড়ি বেগমপুরে৷ আমি সরকারি রেশন পাই৷ আমার কোনও অভিযোগ নেই৷ আমি আগে যাত্রা করতাম৷ পাড়ার কয়েকটি ছেলে বলেছিল- কাকা, লকডাউনের মধ্যে খেতে পাচ্ছো না- এমন একটা অভিনয় করে দেখাও তো! তো আমি দেখালাম৷ সেটাই বোধহয় ওরা পোস্ট করেছিল।” রাজ্য পুলিশের টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে ওই ভিডিও।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে এই ধরনের গুজব ছড়ালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তবে এবার নুসরত জাহানের সংসদীয় এলাকার ভুয়ো ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।
উত্তর চব্বিশ পরগনার যাত্রাশিল্পীকে দিয়ে বাংলার রেশন সংক্রান্ত সম্পূর্ণ ভুল তথ্য প্রয়োগ ও পরিবেশন।
তাঁর ডিজিটাল রেশন কার্ড আছে এবং গত ২ এপ্রিল, ২০২০-তে তিনি রেশন সংগ্রহও করেছেন।
দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
সাবধানে থাকুন।
দায়বদ্ধ থাকুন।#FakePostAlert (১/২) pic.twitter.com/UvNqSmM5Iv— West Bengal Police (@WBPolice) April 18, 2020
যাত্রাশিল্পী সত্যিটা বলছেন (২/২) pic.twitter.com/Piv3VWQJiy
— West Bengal Police (@WBPolice) April 18, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.