সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সংগঠনই নেই এদিকে সেই সংগঠনের সদস্য সংগ্রহের জন্যে দেদার টাকা তোলা হচ্ছে৷ শাসকদলের নামে এই টাকা তোলার বহর দেখে চোখ কপালে খোদ নেতৃত্বেরই৷ দলের জেলা সভাপতির নির্দেশেই টাকা তোলা হচ্ছে বলে দাবি ওই বেআইনি সংগঠনের তথাকথিত নেতৃত্বের৷ কড়া প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের জেলা সভাপতির৷ ‘ ক্যাজুয়াল এন্ড কন্ট্রাক্ট লেবার ইউনিয়ন’৷ আইএনটিটিইউসি অনুমাদিত! জাল নথিভুক্তকরণ নম্বর দিয়ে ছাপানো ঝকঝকে লেটার প্যাড৷ সেই প্যাডে চেয়ারম্যান হিসাবে নাম রয়েছে আইএনটিটিইউসির সর্বভারতীয় সভাপতির৷ আর ওই প্যাড দেখিয়েই দুর্গাপুরের বেসরকারি ‘আই কিউ সিটি’ হাসপাতালে ঠিকা শ্রমিকদের সদস্য করার নামে টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ এই ভুয়ো সংগঠনের হয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় সভাপতি শ্রীনিবাস গুপ্তা নিজেকে স্বঘোষিত তৃণমূল নেতা জাহির করে এই ‘তোলাবাজি’র নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ৷ সদস্য চাঁদা কত? ছয় মাস বা একবছরের জন্যে মাসে চাঁদা দশ টাকা করে৷ পরে আরও বাড়বে এই চাঁদা৷ কিন্তু ওই হাসপাতালের ঠিকাকর্মীদের প্রথম সন্দেহ হয় এই গজিয়ে ওঠা সংগঠনকে ঘিরেই৷ আর খোঁজ খবর নিতেই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ বছর চারেক আগে উত্তরবঙ্গের কোন এক তৃণমূলের এক কর্মী এই সংগঠনের জন্যে আইএনটিটিইউসির কাছে নথিভুক্তকরণের জন্যে আবেদন করেন৷ কিন্তু তা নথিভুক্ত হয়নি৷ এখন সেই সংগঠনকেই আবার পাদপ্রদীপের আলোয় এনে চলছে তোলাবাজি৷
‘ক্যাজুয়াল এন্ড কন্ট্রাক্ট লেবার ইউনিয়ন’ এর চেয়ারম্যান এবং সর্বভারতীয় আইএনটিটিইউসির সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বহুদিন আগেই এই সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে গেছে৷ এই সংগঠনের আর কোন আইনি স্বীকৃতি নেই৷ যারা এই সংগঠনের হয়ে সদস্য পদ সংগ্রহের জন্যে টাকা তুলছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷” সংগঠনের জেলা সভাপতি তারই এই ভূয়ো সংগঠনের চেয়ারম্যানের কথা উড়িয়ে দিয়ে সরাসরি তৃণমূলের জেলা সভাপতির নির্দেশেই এই টাকা তোলা হচ্ছে বলে জানান৷ এই সংগঠনের জেলা সভাপতি শ্রীনিবাস গুপ্তা জানান,“ চেয়ারম্যান প্রদীপ বন্দোপাধ্যায় সব জানেন৷ আমরা সংগঠনের সদস্য চাঁদা তুলছি তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা বলেই৷” তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি ভূয়ো সংগঠনের এই সভাপতির কথা শুনে তো আইনি ব্যাবস্হা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন দাশু জানান, “দলের শ্রমিক সংগঠনকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷ যেখানে আইএনটিটিইউসির সর্বভারতীয় সভাপতিই ওই সংগঠনকে বেআইনি বলে আখ্যা দিয়েছেন সেখানে আমার কিছু বলাই উচিত নয়৷ যারা এই সব বেআইনি কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷” দলের নেতাদের নাম করে এই ‘তোলাবাজি’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছে দলের কর্মী ও নেতারা৷ শ্রীনিবাস গুপ্তার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগে অস্বস্তিতে পরতে হয়েছে দলকে৷ এবার দল কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে চলেছে তার বিরুদ্ধে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.