Advertisement
Advertisement

Breaking News

Fake passport

ফেলো কড়ি, বানাও জাল নথি! কীভাবে কাজ করত ‘পাসপোর্ট সমীর’? জেনে তাজ্জব পুলিশ

'হামারা কেন্দ্র' নামে সাইবার ক্যাফের আড়ালে চলত জাল নথি তৈরি। সমীরের সূত্র ধরে আরও দুজনও গ্রেপ্তার হয়েছে।

Fake passport made by the arrested man with advance booking from Bangladesh
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 9, 2025 8:13 pm
  • Updated:January 9, 2025 8:15 pm  

অর্ণব দাস, বারাসত: কারবার জাল তো কী? সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকলে কোনও জালিয়াতি যে বেশিদিন চলে না, তা দিব্যি টের পেয়েছিলেন বারাসতের ‘পাসপোর্ট সমীর’ ওরফে সমীর দাস। আর তাই তার কাজের পদ্ধতিও ছিল একেবারে নিখুঁত ছকে বাঁধা। বেআইনিভাবে নথিপত্র চাইলে আগে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বুকিং করুন, তারপর আগাম টাকা দিন। তবেই কাজ হবে! মঙ্গলবার রাতে বারাসত থেকে সমীরকে গ্রেপ্তারের পর জেরায় এসব কথা জেনে একেবারে তাজ্জব পুলিশ। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হয়েছে তার দুই শাগরেদ কৌশিক মণ্ডল ও চন্দন চক্রবর্তীও।

বারাসত থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, ভারতীয় পরিচয়পত্র বানানোর জন্য বাংলাদেশ থেকেই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বুকিং করা হত। এরপর নির্দিষ্ট রেট অনুযায়ী অগ্রিম টাকা পাঠানো হত সমীর দাসকে। টাকা পাওয়ার পর সমীর প্রথমে জাল ভোটার কার্ড তৈরি করিয়ে, সেই ভোটার কার্ড দিয়ে আধার কার্ড, প্যান কার্ড-সহ বার্থ সার্টিফিকেট বানাত। দক্ষিণপাড়া শীতলাতলা রোড এলাকায় ‘হামারা কেন্দ্র’ নামে সাইবার ক্যাফে আছে কৌশিকের। পুলিশ সূত্রে খবর, এদেশে আসবে এমন বাংলাদেশিদের ভোটার কার্ড তৈরির জন্য ৭-৮ হাজার টাকা, আধার কার্ড তৈরির জন্য ১৫ হাজার টাকা, প্যান কার্ড তৈরির জন্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা এবং জন্ম শংসাপত্র তৈরির জন্য ১২ হাজার টাকা বাংলাদেশের এজেন্টদের মাধ্যমে অগ্রিম নিত সমীর।

Advertisement

অর্ডার পাওয়ার পরেই কাজ পেত কৌশিক। সে সাইবার ক্যাফের আড়ালে মূলত জাল প্যান এবং আধার কার্ড তৈরি করত। এই চক্রের সঙ্গে আরও তিন-চার জন যুক্ত রয়েছে। তারা বাকি জাল পরিচয় পত্র তৈরি করে দিত বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। শেষে দায়িত্ব পড়ত চন্দনের। সে ওপার বাংলা থেকে এদেশে আসা ক্লায়েন্টদের থাকার ব্যবস্থা করত। এই প্রসঙ্গে বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া জানিয়েছেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত চলছে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কয়েকজনের যোগ রয়েছে, এমন নাম জানা গিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করার পরেই গোটা চক্রের কার্যকলাপ পাওয়া যাবে।”

জানা গিয়েছে, মূলত একমাসের মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে এ রাজ্যে আসা বাংলাদেশিরা এই চক্রের মাধ্যমেই বেশ কয়েকমাস এদেশে থাকতেন। সেই বাংলাদেশিরা এই জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে এদেশে ব্যাঙ্ক অ‍্যাকাউন্ট বানিয়ে লেনদেন করত বলেও চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাই এই চক্রের সঙ্গে জাল পাসপোর্ট তৈরির যোগ রয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার সকালে থানা ধৃত কৌশিক ও চন্দনকে বারাসত আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা জানায়, “আমরা পাসপোর্ট তৈরি করিনি।” ধৃত কৌশিকের বাবা সুশীল মণ্ডল বলেন, “স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে ছেলের সাইবার ক্যাফের ব্যবসা করে। অনলাইনে কাজকর্ম করে জানি। কিন্তু কী কাজ করে, সেটা জানি না। পুলিশ কী কারণে ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে সেটাও জানি না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement