নন্দন দত্ত, সিউড়ি: হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। রোগ সারাতে তিনি আবার ইনজেকশন দেন। এটাই নাকি তাঁর ন্যাচারপ্যাথি। দক্ষিণ ভারতের নামী হাসপাতাল ফেরত রোগীদের তিনি নাকি গ্যারিন্টি দিয়ে রোগ সারান। এমন চিকিৎসক মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী ওরফে কালীশংকরের বিরুদ্ধে শনিবার বিক্ষোভ দেখাল বাসিন্দারা। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হল তারাপীঠ। স্থানীয়রা এই ‘হাতুড়ে’ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রামপুরহাট মহকুমা শাসক নাভেদ আখতারের কাছে গণসাক্ষরিত অভিযোগপত্র তুলে দেন।
[ আরও পড়ুন: টাকার লোভে স্কুলে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগ, কাঠগড়ায় প্রধান শিক্ষিকা ]
মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বাড়ি কলকাতার ঘুঘুডাঙায়। বছর খানেক ধরে ৬০ বছর এই প্রৌঢ় তারাপীঠে বাড়ি করে আছেন। সেখানেই তাঁর ন্যাচারোপ্যাথির চেম্বার। গড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ জন রোগী হয়। সকলকেই তিনি হোমিওপ্যাথি ওষুধ দিয়ে ৩০০ টাকা নেন। তিনি ‘জীবন্ত আবিষ্কার’ নামে একটি পুস্তিকায় তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েও লিখেছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, যে কোনও দুরারোগ্য ব্যাধি যা কোথাও সারেনি, তা তিনি সারিয়ে তুলবেন। তাঁর কাছে দৈবশক্তি সম্পন্ন ন্যাচারোপ্যাথি ওষুধ আছে। তাঁর কথায় ভরসা করে এলাকার মানুষ তাঁর কাছে রোগী দেখাতেন।
শনিবার বিক্ষোভে শামিল এক গৃহবধূ জানান, তাঁর মেয়েকে থাইরয়েড সারাবার নামে একদিন অন্তর ইঞ্জেকশন ও ওষুধ দিচ্ছেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু। প্রতিবার ৩০০ টাকা করে নিচ্ছেন। এদিকে তিনি জানতেনই না মৃত্যুঞ্জয়বাবুর কাছে কোনও ডিগ্রি নেই। বিক্ষোভে সামিল স্থানীয় তৃণমূল নেতা কমল লেট জানান, ওই চিকিৎসক তাঁর সপক্ষে কোনও ডিগ্রির কাগজ দেখাতে পারেননি। মহকুমা শাসক বলেন, “যে ডিগ্রির বলে উনি চিকিৎসক বলে দাবি করছেন তা সঠিক কিনা তা যাচাই করতে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে আবেদন পত্রটি পাঠিয়ে দেব।” মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৌম্যজিৎ বড়ুয়া জানান, চিকিৎসক ভুয়ো ডিগ্রিধারী স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়ে দিলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[ আরও পড়ুন: বেআইনি অস্ত্র মজুতের অভিযোগ, পুলিশের জালে ২ বিজেপি নেতা ]
মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “আগে দমদমে ছাত্র পড়াতাম। সেখানেই টুকটাক চিকিৎসা করতাম। তখন থেকেই লোকে আমাকে ডাক্তারবাবু বলে ডাকত। আমি সামান্য জ্বর জ্বালার চিকিৎসা করি। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।”
ছবি: সুশান্ত পাল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.