ধীমান রায়, কাটোয়া: সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেউ অসুস্থ আছেন কিনা খোঁজ নিচ্ছেন স্বয়ং ডাক্তার। এদিক ওদিক হলেই প্রেসার মেপে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন তিনি। হ্যাঁ, বুধবার সকালে এই ছবি দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানে। আর এভাবে একের পর এক বাড়ি গিয়ে রোগীর খোঁজ নিতে গিয়েই হাতে নাতে ধরা পড়ল ভুয়ো ডাক্তার।ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ভাতার থানার বড়বেলুন গ্রামের দাসপাড়ায়।
বুধবার বেলার দিকে পশ্চিম বর্ধমানের কাটোয়ার দাসপাড়ায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে রোগী দেখছিলেন এক ডাক্তার। নাম বাবলু প্রামাণিক। তার ব্যাগে ছিল চিকিৎসার বেশ কিছু সরঞ্জাম ও বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্যাড। এলাকার কোনও বাড়িতে কেউ অসুস্থ থাকলেই তার প্রেসার পরীক্ষা করে তাকে ওষুধ দিচ্ছিল বাবলু। আর তা বাবদ ফি মাত্র ৫০ টাকা। তবে প্রেসক্রিপশনে বাবলু নয়, সমীরণ কর্মকার নামে সই করছিল ওই ব্যক্তি। একই পদ্ধতিতে কয়েকটি বাড়িতে হানা দেওয়ার পর বাবলুর আচরণে সন্দেহ হয় স্থানীয় কয়েজন যুবকের। তারা চেপে ধরতেই, ভেঙে পড়ে বাবলু। আসল তথ্য প্রকাশ করে খোদ ভুয়ো ডাক্তার। অভিযুক্তের কথায়, বেশ কিছুদিন ধরে কাটোয়ার করুই গ্রামে ভাড়া থাকে সে। সেখানে একজন চিকিৎসকের সহযোগী হিসেবে কাজ করত সে। একই সঙ্গে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এজেন্ট হিসেবে কাজ করত সে। সেখানে অস্ত্রপচার বাবদ মোটা অঙ্কের টাকাও পেত বাবলু। সেই সঙ্গে গান শেখানো, টিউশন পড়ানো-সহ একাধিক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল বাবলু।
এরপরই উত্তেজিত স্থানীয়রা খবর দেন এলাকায় কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ভাতার থানায় নিয়ে যায় তারা। গতবছর ভুয়ো চিকিৎসকদের চিহ্নিতকরণ ও তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছিল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলেছে ধড়পাকড়। তবে ঘটনার পর কিছুদিন কাটতে না কাটতেই ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রাজ্যে। এই ঘটনায় কার্যত হতবাক স্থানীয়রা। তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনও মামলা দায়ের করা হয়নি।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.