Advertisement
Advertisement

Breaking News

কাটমানি

মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার ভুয়ো অভিযোগ, প্রতিবাদে পথে নামছে তৃণমূল

মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর নামে ভুয়ো পোস্টার ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Fake cutmoney poster against minister Sandhyarani Tudu in Purulia makes controvesry
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 4, 2019 9:02 pm
  • Updated:July 4, 2019 9:27 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঘেরাও,বিক্ষোভ বা অভিযোগ নয়। এবার রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়া নিয়ে সোশ্যাল সাইটে ভুয়ো পোস্ট ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়াল পুরুলিয়ায়। এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নাম দিয়ে ওই পোস্ট সোশ্যাল সাইটে ছড়িয়ে পড়ায় প্রণব মণ্ডল নামে ওই শিক্ষক নিজেই অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।

[আরও পড়ুন : আস্ত ছাগল খুবলে খেল ১৮ ফুটের অজগর! উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত বনকর্মীও]

সোশ্যাল সাইটে প্রণব মণ্ডলের নাম দিয়ে যে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ছড়িয়েছে তাতে লেখা রয়েছে, “বিশেষ আবেদন: এতদ্বারা মানবাজার বিধানসভার অন্তর্গত সর্বসাধারণকে জানানো যাইতেছে, যাহারা সরকারি চাকরির জন্য সন্ধ্যারানি টুডু, গুরুপদ টুডু এবং মানবেন্দ্র চক্রবর্তীকে টাকা দিয়েছেন৷ অবিলম্বে সাতদিনের মধ্যে তাহারা প্রাপ্য পাওনা টাকা ফেরত নিয়ে নিন৷ কারণ, এঁদের চাকরি দেওয়ার আর কোনও ক্ষমতা নেই। যদি ফেরত না দেয় তাহলে থানায় লিখিত অভিযোগ করুন।এদেরকে চাপ দিয়ে টাকা ফের নিন, সাথে সাথে এও জানাই, মানভূম কলেজে চাকরির জন্য যাঁরা টাকা দিয়েছেন তাঁরাও টাকা ফেরত নিন। ঘুষখোরদের মুখোশ খুলে দিন। ইতি–প্রণব মণ্ডল, মানবাজার”।

Advertisement

এরকম বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট করায়, ভুল বোঝাবুঝি ঘোচাতে পালটা প্রচারপত্র ছাপিয়ে তা বিলিও করেন ওই শিক্ষক। ফলে, দেরিতে হলেও
‘কাটমানি’ কান্ডের আঁচ লাগল পুরুলিয়ায়।প্রণব কুমার মণ্ডলের বাড়ি মানবাজার থানার লাগদাগোড়া গ্রামে। তিনি এই মানবাজার বিধানসভার পুঞ্চা থানা এলাকার টাটাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি পালটা প্রচারপত্রে বিশেষ আবেদন শিরোনামে বলেছেন, “আমি, শ্রী প্রণব কুমার মণ্ডল, মানবাজার বিধানসভার অন্তর্গত সর্বসাধারণকে জানাই যে দিন কয়েক আগে (ইং– ২৬.০৬.২০১৯) আমার নাম ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং মিথ্যা প্রচারপত্র সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে (হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক) এবং ছাপানো প্রচারপত্র বিলি হয়েছে। যাহাতে আমাদের সম্মানীয়া মন্ত্রী মাননীয়া সন্ধ্যারানি টুডু, মাননীয় গুরুপদ টুডু ও মানবেন্দ্র চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর অপপ্রচার করা  হয়েছে। আমি কোনওভাবেই এর সাথে যুক্ত নই ও এই প্রচারপত্র আমি কোনওভাবেই জনসমক্ষে আনিনি। আমি এর বিরুদ্ধে ওইদিনই  (ইং–২৬.০৬.২০১৯) মানবাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আশা করি, দোষীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।”
সেইসঙ্গে প্রচারপত্রের শেষে বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে লেখা রয়েছে, “এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উল্লেখিত ব্যক্তিদের সম্মানহানির একটি প্রচেষ্টা মাত্র এবং জনসমর্থন নষ্ট করার একটি প্রচেষ্টা।” তবে যে শিক্ষক প্রণব কুমার মণ্ডলকে ঘিরে এত বিতর্ক, তিনি বলেন, “আমার নাম করে সোশাল সাইটে যে পোস্ট ছড়ানো হয়েছে তা একেবারে ভুয়ো। এই বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। পুলিশ তদন্ত করছে।”

[আরও পড়ুন: দুবরাজপুরে বোমাবাজিতে আহত ৪ বিজেপি কর্মী, অভিযুক্ত শাসকদল]

সামগ্রিক ঘটনায় হতবাক রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যান দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু নিজে৷ তিনি পুলিশকে যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, সোশ্যাল সাইটে এই ভুয়ো পোস্ট যারা করেছে, তাদের নাম-পরিচয় জানার পর প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মন্ত্রী৷ তিনি বলেন, “তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘কাটমানি’ ফেরত নিয়ে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। যাতে সাধারণ মানুষ সমস্যায় না পড়েন, সেদিকটা খেয়াল রেখেছেন তিনি৷ কিন্তু এই বিষয়টি সামনে রেখে বিরোধীরা অযথা ঝামেলা পাকাচ্ছে। তাদের হাতে কোনও ইস্যু নেই। ফলে এটাকেই কাজে লাগাচ্ছে।মানবাজারে আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। পুলিশকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এই ঘটনায় দোষীদের নাম পেলেই এক কোটি টাকার মানহানির মামলা করব।”
ওই পোস্টটিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা হয়েছে বলে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই পোস্টে জড়ানো হয়েছে মন্ত্রীর স্বামী তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্য আদিবাসী শিক্ষক নেতা গুরুপদ টুডুকেও৷ নাম জড়িয়েছে মানবাজার ১ ব্লকে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তীরও।

[আরও পড়ুন: প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে, রেশন দুর্নীতি রুখতে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর]

লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া কেন্দ্রে শাসকদলের ভরাডুবি হলেও মানবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের লিড রয়েছে গত ২০১৬র বিধানসভা নির্বাচনের চেয়েও বেশি। ফলে মানবাজার এক নম্বর ব্লক তৃণমূলের অভিযোগ, শাসক দলকে বিপাকে ফেলতে বিরোধীরাই এই কাজ করছেন। এই রাজনীতির বিরুদ্ধে আগামী ১৭ জুলাই মানবাজার ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল পথে নামছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement