রাজা দাস, বালুরঘাট: রাজ্যসভার প্রার্থী হলেও জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরছেন না। সাফ জানিয়ে দিলেন অর্পিতা ঘোষ। রবিবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাজ্যসভার চার প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নাম রয়েছে বালুরঘাটের প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষের। টুইটারে এই ঘোষণা প্রকাশ্যে আসার পরই দক্ষিণ দিনাজপুরের রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল যে রাজ্যসভার সাংসদ হলে, জেলা সভাপতির পদে তিনি থাকবেন কি না। জল্পনা উড়িয়ে অর্পিতা নিজেই জানিয়ে দিলেন যে জেলায় সংগঠনের দায়িত্ব সামলাবেন তিনিই।
নাট্যব্যক্তিত্ব হিসেবে দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর কাছে বেশ জনপ্রিয় অর্পিতা ঘোষ। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট আসনে দাঁড়িয়ে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০১৯ সালের ভোটে পরাজিত হন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই পারফরম্যান্সের বিচারে তৎকালীন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে তৃণমূলের সেই ভার দেওয়া হয় অর্পিতাকে। তবে রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে আবারও তিনি দিল্লির পথে। জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী অর্পিতা ঘোষ।
এদিকে, তৃণমূলের নতুন কর্মসূচি ‘বাংলার গর্ব মমতা’র শুরুতেই দক্ষিণ দিনাজপুরে দলীয় কর্মীদের একাংশের ব্যর্থতা উঠে এল টিম পিকে’র উপস্থিতিতে। রবিবার তৃণমূলের বালুরঘাট বিধানসভা ভিত্তিক কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে যা অকপটে স্বীকার করলেন দলীয় নেতা শংকর চক্রবর্তী। শনিবার থেকে রাজ্যের পাশাপাশি জেলার ৬ টি বিধানসভায় শুরু হয়েছে তৃণমূলের বাংলার গর্ব মমতা। তিনটি পর্যায়ে মোট ১১ টি কর্মসূচি পালিত হবে ৭৫ দিন ধরে। ৮ থেকে ১৪ মার্চ দ্বিতীয় কর্মসূচির মধ্যে ছিল ‘জলযোগে যোগাযোগ’। রবিবার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই কর্মসূচি হয় বালুরঘাট শহর সংলগ্ন বিএম হাইস্কুলের পার্শ্ববর্তী একটি অনুষ্ঠান হলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাট বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক তথা ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কার্যক্রমের কনভেনার শংকর চক্রবর্তী-সহ হাতে গোনা দু’চারজন স্থানীয় নেতা। সেখানে টিমের পিকে’র উপস্থিতি ও তত্ত্বাবধানে প্রোজেক্টারের দ্বারা কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আহ্বায়ক শংকর চক্রবর্তী স্বীকার করে নেন, বালুরঘাটে কিছু দলীয় কর্মীর ব্যর্থতা আছে। তিনি বলেন, “স্থানীয় কিছু নিচু তলার নেতাদের কারণে জনসংযোগে বিচ্যুতি ঘটছে। ওই সমস্ত নেতারা সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন। দলের উপর মহল থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা পালনে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।”
অন্যদিকে, এদিন চকভৃগুতে তৃণমূলের তপন বিধানসভা ভিত্তিক ‘জলযোগে যোগাযোগ’ কর্মসূচি পালিত হয়। সেখানেই বিতর্কিত মন্তব্য করে দলের মধ্যে বেকায়দায় পড়েন তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আদিবাসী এলাকায় উন্নয়ন করে ভোট হয় না। ভোট করতে হয় অন্যভাবে।” এদিকে, উন্নয়নকে সামনে রেখে ওই আদিবাসী নেতাকে মুখ করে তপনে তৃণমূলের প্রচার চলছে। সেখানে বাচ্চুবাবুর এমন মন্তব্য সামনে আসতেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রাসাদপ্রম বাড়ি নিয়ে এর আগে স্বয়ং প্রশান্ত কিশোরের সমালোচনায় পড়েছিলেন বাচ্চু হাঁসদা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.