সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের জমি থেকে গাছ চুরি! ‘ব্যক্তিগত’ জমি থেকে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক ও বনদপ্তরে দায়ের লিখিত অভিযোগ। তদন্ত শুরু করেছে বনদপ্তর। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (নারী ও শিশুকল্যাণ) বুলু রায়ের স্বামী বুদ্ধদেব রায় আবার বনকাটি অঞ্চলের অঞ্চল সভাপতি। দুজনের অনুপস্থিতিতে কয়েকশো দামী গাছ কাটা হয়েছে তাঁদের জমি থেকে বলে অভিযোগ।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বুলু রায়ের অভিযোগ,”লোকসভা নির্বাচনের আগে আমার স্বামী অসুস্থ ছিলেন। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আমার স্বামী। তখন বেশ কয়েকদিন আমি ওখানেই ছিলাম। এই সুযোগেই আমাদের জমিতে থাকা সেগুন, শিশু মিলিয়ে ১০০র অধিক গাছ বিক্রির জন্য কাটা হয়েছে। এই গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জায়গায় প্রধান কীভাবে অনুমতি দিতে পারেন গাছ কাটার? আমি ইতিমধ্যেই বনদপ্তরের দুর্গাপুর রেঞ্জে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযোগ করেছি মহকুমাশাসকের কাছেও। শুধু বনাঞ্চল ধ্বংস নয় এই অন্যায় কাজের সুবিচার চাইছি আমি।”
এই বিষয়ে বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তবাসুম খাতুন একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। অন্যদিকে বন দফতরের দুর্গাপুর বনাঞ্চলের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,” আমার কাছে একটা অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে ওই গাছ কাটার অনুমতি প্রধান দিয়েছেন কিনা তা জানা নেই। যদিও ব্যক্তিগত জমিতে গাছ দেখার দায়িত্ব বনদপ্তরের থাকেনা। কিন্তু কাটতে গেলে বনদপ্তরের অনুমতি লাগে। আর কোন ব্যক্তিগত জমি থেকে গাছ কেটে নেওয়ার অনুমতিও প্রধান দিতে পারেন না। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি। অভিযোগটি কাঁকসা থানাতেও পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি তদন্ত করে রিপোর্ট ডিএফওকে পাঠাব।”
কিছুদিন আগে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বুলু রায়ের স্বামী যিনি আবার তৃণমূলের বনকাটি অঞ্চল সভাপতি সেই বুদ্ধদেব রায়ের বিরুদ্ধে সরকারি কৃষি জমি হরফের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় পঞ্চায়েত প্রধান তবাসুম খাতুন এই অভিযোগ স্বীকার করে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। এবার তবাসুমের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ আনলেন কর্মাধ্যক্ষ। তৃণমূলের এই দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বিজেপির পূর্ব বর্ধমানের জেলা সহ সভাপতি রমেন শর্মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.