সৌরভ মাজি, বর্ধমান: তাঁত শিল্পের বিকাশে ভরতুকি দিচ্ছে সরকার। তাঁতশিল্পীরা উৎপাদন খরচে ভরতুকি পাবেন। ফলে কমছে তাঁতের শাড়ির দাম। আর সেই শাড়ি কিনতে পারবেন সাধারণ মানুষও। তবে সেই শাড়ি কেনার একটাই শর্ত, রেশন কার্ড দেখাতে হবে। আর সেই শাড়ি মিলবে রাজ্য সরকারে অধীনস্থ তন্তুজের এক্সক্লুসিভ শোরুম থেকেই। বাঙালি রমণীদের তাঁতের শাড়ির প্রতি আকর্ষণের কথা নতুন করে বলার কিছু নয়। তবে সাধ থাকলেও অনেক সময় তা কেনার সাধ্য থাকে না। এবার ভরতুকিযুক্ত শাড়ি কিনে সেই সাধপূরণের সুযোগ পাবেন তাঁরা।
রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁত শিল্পের বিকাশ ও তন্তুবায়দের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম তাঁত শিল্পীদের ভরতুকি প্রদান।” তিনি জানান, তাঁতশিল্পীরা সরাসরি তাঁত বস্ত্র যাতে বিক্রি করতে পারেন সে কারণে কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রাম ও শ্রীরামপুরে তাঁতের হাট গড়া হয়েছে। সেখানে সরাসরি তাঁতিরা এসে তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি করতে পারছেন। সাধারণ নাগরিকরা কিনতেও পারছেন। আবার বড় ব্যবসায়ীরাও সেখান থেকে একলপ্তে প্রচুর তাঁতবস্ত্র কিনে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতে পারছেন। পাশাপাশি, সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে তন্তুজও।
পুজো, নববর্ষের সময় তাঁতিদের কাছ থেকে সরাসরি তাঁতবস্ত্র কেনে রাজ্য সরকারের এই সংস্থা। এবার তাদের এক্সক্লুসিভ শোরুমেও বিক্রি হবে ভরতুকির শাড়ি। এদিন শ্রীরামপুরে তন্তুজের একটি শোরুমের উদ্বোধনও করেন স্বপনবাবু। তিনি জানান, সেখানে ভরতুকিযুক্ত কম দামের শাড়ি যেমন মিলবে, তেমনই তন্তুজের এক্সক্লুসিভ শাড়িও মিলবে। ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে শুরু হবে শাড়ির দাম। আবার সেখানে ৯৬ হাজার টাকা দামেরও শাড়িও মিলবে। ভরতুকিযুক্ত শাড়ির দাম সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকার মধ্যে থাকবে। শোরুমে সকলেই তাঁতের শাড়ি কেনার সুযোগ পাবেন। স্বপনবাবু বলেন, “ভরতুকিযুক্ত শাড়ি কিনতে গেলে ক্রেতাদের সঙ্গে করে রেশন কার্ড আনতে হবে।” কারণ, রেশন কার্ডের মাধ্যমেই বোঝা যাবে ক্রেতার আর্থিক অবস্থা কেমন। মন্ত্রী জানান, এই ভরতুকিযুক্ত শাড়ি উৎপাদন করে তাঁতিরা উপকৃত হচ্ছেন। তাঁরা সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন। তাঁদের শাড়ির দামও কম রাখতে পারছেন। আবার ক্রেতাও ভরতুকির সুবিধা পাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের নির্দেশে স্বপন দেবনাথের দপ্তর তন্তুবায়দের দিয়ে বেনারসির আদলে বিয়ের শাড়িও তৈরি করছে। যা তন্তুজর মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। এই তাঁতের শাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ম্যারেজ’ শাড়ি। বাঙালি কনেদের মধ্যে ইতিমধ্যেই তা বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে। স্বপনবাবু জানান, তাঁতশিল্পীদের বিকাশে হাবও তৈরি হয়েছে। যেখানে এক ছাদের তলায় তাঁতবস্ত্র উৎপাদনের সমস্ত সামগ্রীর দোকান হয়েছে। ব্যাংক হয়েছে। আবার ফ্লোরে বসে তাঁতিরা শাড়িও বিক্রি করছেন। এবার সেখানে ভরতুকিযুক্ত শাড়ি ও বিশেষ ধরনের দামি শাড়ি বিক্রির ব্যবস্থা করতে তন্তুজ শোরুমও খুলে দিচ্ছে। ফলে তাঁত শিল্পের সার্বিক বিকাশ ঘটছে। শোরুমে ভরতুকির শাড়ির পাশাপাশি ‘ম্যারেজ’ শাড়ি, মুর্শিদাবাদ-মালদহের উন্নত সিল্কের তৈরি তাঁতের শাড়িও মিলছে। ধাপে ধাপে রাজ্যের সর্বত্রই এই ধরনের শোরুম খোলা হবে বলে জানান স্বপনবাবু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.